আজকের কালী কথায় কোচবিহারের বড়ো দেবীর পুজোর কথা বলবো যে পূজোর বয়স প্রায় পাঁচশো বছর। এই ‘বড় দেবী’ দেবী কে রক্ত বর্ণা দেবীও বলা হয়।কেনো এই নাম তার কারন পরে জানাবো আগে এই পূজোর প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে জানাই।শতাধিক বছর আগে কোচবিহার রাজ বংশের অন্যতম রাজা মহারাজা নরনারায়ণ স্বপ্নে ওই এই দেবীকে দেখেছিলেন সেই রূপেই আজও এখানে পূজিত হন দেবী।প্রথাগত প্রতিমার থেকে এই প্রতিমা সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে দেবী রক্তবর্ণা এবং উগ্ররূপে তিনি বিরাজ করছেন । সঙ্গে থাকেন দুই সখী জয়া এবং বিজয়া। দেবীর বাহন বাঘ এবং সিংহ উভয়।তবে একদম শুরুতে দেবীর এই রূপ ছিলোনা।প্রায় পাঁচশো বছর আগে এই রাজ বংশের বিশ্ব সিংহ এবং তাঁর ভাই শীষ্য সিংহ খেলার ছলে দেবীর আরাধনা শুরু করেন। ময়নার ডালকেই দেবীরূপ দিয়ে পুজো করেন তাঁরা। পরবর্তীতে সেই কাঠ ‘বড় দেবী’র মন্দিরে এনে, তাকে কাঠামো হিসেবে ব্যবহার করে তার উপর শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ।জনশ্রুতি আছে ‘বড় দেবী’র পুজোয় একফোঁটা হলেও প্রাণীর রক্তর প্রয়োজন হয় এবং আজও নাকি তাজা রক্ত সংগ্রহ করে দেবীকে উৎসর্গ করা হয়।এই অদ্ভুত রীতি নিয়ে একটি কিংবদন্তী প্রচলিত আছে। শোনা যায় একবার মহারাজা বিশ্ব সিংহ খেলার ছলে এক সাথীকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে সেই বালকের মাথা আলাদা হয়ে যায় ধড় থেকে। সেই মাথা দেবীকে নিবেদন করেন বিশ্ব সিংহ। সেই থেকেই এই রীতির প্রচলন।বর্তমানে বর্তমানে পুজোর আয়োজন করে রাজ্য পর্যটন দফতরের অধীনস্থ কোচবিহার দেবত্র ট্রাস্ট। আজও পুজোতে পশুবলি হয়। অষ্টমীতে মহিষ, দশমীতে শূকর বলির প্রথা চালু রয়েছে এখনও।এখানে দূর্গা পুজোয় ধুম ধাম করে দেবী আরাধনা হয় এবং বিসর্জনের সময় যমুনা দীঘিতে নিয়ে যাওয়া হয় মৃন্ময়ী প্রতিমা যা খণ্ডিত করে বিসর্জন দেওয়া হয়। বাংলার বহু এমন ঐতিহাসিক কালীপুজো এবং অলৌকিক ঘটনানিয়ে চলতে থাকবে কালী কথা।থাকবে গুরুত্বপূর্ণ শাস্ত্রীয় উপাচার। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।