বিশেষ পর্ব – অম্বুবাচীর নিয়মাবলী ও বিধি নিষেধ

164

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আসন্ন অম্বুবাচী উপলক্ষে আজকের পর্বে আলোচনা করবো অম্বুবাচী সংক্রান্ত নানা শাস্ত্রীয় নিয়ম কানুন ও তাৎপর্য, জানবো এ সংক্রান্ত নানা বিধি নিষেধ ও তার অন্তর্নিহিত তাৎপর্য|

অম্বুবাচীর আগের দিনটিকে বলা হয় ‘অম্বুবাচী প্রবৃত্তি’। তিন দিনের পরের দিনটিকে বলা হয় ‘অম্বুবাচী নিবৃত্তি’ যার পর আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার সূচনা হয়।

শাস্ত্র মতে অম্বুবাচীর প্রথম তিন দিন কৃষি কাজ ছাড়াও আরো অনেককিছুই করা নিষেধ, এই সময় কোনো শুভ বা মাঙ্গলিক কাজের সূচনা করা হয়না যেমন বিবাহ,গৃহ প্রবেশ বা মঠ ও মন্দিরের স্বাভাবিক পূজাঅর্চনা ইত্যাদি|আসলে এই সময় ধরিত্রী যেহেতু ঋতুমতী হয় তাই লৌকিক আচার ও প্রথা গুলিকে সাময়িক ভাবে স্থগিত রাখা হয় এর পেছনে আছে বা বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং হাজার হাজার বছরের প্রাচীন পরম্পরা ও শাস্ত্রীয় বিধান|যদিওঅম্বুবাচি নিবৃত্তি উপলক্ষে চতুর্থ দিন
থেকে শুভ কাজে আর কোনো রকম বাধা থাকেনা|শুধু তাই নয় সেই সময় তন্ত্র ক্রিয়া, বিশেষ পুজো এবং গ্রহের প্রতিকার সবই বেশি দ্রুত এবং
ভালো ফল দেয়।

শাস্ত্র মতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও কয়েকটি বিধি নিষেধ এই অম্বুবাচী চলাকালীন মেনে চলা শ্রেয় যেমন মাতৃ শক্তির বিভিন্ন রূপকে যারা পূজা করেন অর্থাৎ কালী, চন্ডি, দূর্গা জগদ্ধাত্রী ইত্যাদি তারা দেবীমূর্তি কে একটি লাল কাপড়ে ঢেকে রাখতে পারেন |

এই সময়ে দেবী মূর্তিকে স্পর্শ করা বা মন্ত্রউচ্চারণ করা উচিৎ নয়|যারা দীক্ষিত তারা গুরু পূজা করতে পারেন, এছাড়া জপ চলতে পারে তাতে কোনো দোষ নেই|

গৃহী রা এই সময় কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে গৃহের কল্যাণ হয় যেমন নতুন বৃক্ষ রোপন না করা বা দাম্পত্য জীবনে পবিত্রতা বজায় রাখা।

গ্রাম বাংলার বহু স্থানে নিষ্ঠার সাথে অম্বুবাচী পালন করা হয় এবং এই সময়ে বিধবা মহিলারা আগুন জ্বালিয়ে খাবার রান্না করেন না|যারা ব্রহ্মচর্য পালন করেন তাদের এই সময় আমিষ খাবার বর্জন করে মূলত ফল মুল খেয়ে থাকতে হয়|

শাস্ত্র মতে এই কটাদিন বেদ পাঠ করা যায়না এবং উপনয়ন অনুষ্ঠান করা যায়না|

অম্বুবাচি চলা কালীন শাস্ত্র সম্মত স্বাত্তিক জীবন যাপন করুন।গুরু মন্ত্র জপ করুন। তুলসী গাছের পরিচর্যা করুন এবং মা কামাখ্যাকে নিজের মনোস্কামনা জানান। আপনার মনোস্কামনা পূর্ণ হবে।

অম্বুবাচী নিবৃত্তির সময় তন্ত্র সাধনার ও শাস্ত্র মতে গ্রহ দোষ খণ্ডনের উপযুক্ত সময়।এবছর এই তিথিতে আপনাদের মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মায়ের মন্দিরের হোম যজ্ঞ ও গ্রহ দোষ খণ্ডনের সকল ব্যবস্থা থাকবে|প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন। অম্বুবাচি নিয়ে আলোচনা
চলতে থাকবে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।