দেবী মাহাত্ম – মনোহর ডাকাতের কালী পুজো

86

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

বাংলার কালী ক্ষেত্র গুলি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বার বার ঘুরে ফিরে আসে ডাকাত কালীর প্রসঙ্গ কারন আজকের গৃহস্ত বাড়িতে পূজিতা মা কালী এক কালে মূলত তান্ত্রিক ও ডাকাতদের আরাধ্যা দেবী ছিলেন।এমনই এক দুর্ধর্ষ ডাকাত ছিলো কলকাতার মনোহর ডাকাত। তার নামেই আজকের মনোহর পুকুর। তার পূজিতা কালী আজ ছানা কালী বা ছোটো কালী নামে খ্যাত।

পলাশীর যুদ্ধর সময় কলকাতার অধিকাংশ অঞ্চলেই ছিল গভীর জংগল। তার পাশ দিয়ে বয়ে যেত আদি গঙ্গা। অবশ্য তখন তার রূপ ছিল অন্য রকম। এই সমস্ত জঙ্গলে ছিল বাঘ আর সাপের ভয়। এলাকা শাসন করতো মনোহর ডাকাতের। ডাকাতরা।বেজায় কালী ভক্ত মনোহর ডাকাত
সেই সময় জঙ্গলের মধ্যে একটি ছোট কালী মূর্তি প্রতিষ্টা করেছিলেন। কষ্টি পাথরের কালী মূর্তিটি খুবই ছোট। তাই অনেকে এই কালীকে ছানা কালী বা ছোট কালী বলে উল্লেখ করেন।

সেকালে ডাকাত কালী বাড়ি নামেই এটি সুপ্রসিদ্ধ। ছিলো তখন কোন অলংকার ছিল না দেবীর গায়ে। দেবী ছিলেন মুন্ডমালা বিভূষিতা তার হাতে ঝুলতো
নর করোটি।আদিগঙ্গা দিয়ে নৌকো করে বা জঙ্গলের মধ্য দিয়ে সদলবলে এসে দর্শণার্থীরা মাকে দর্শন করতো তবে সন্ধ্যের পর কেউ সাধারণত আসতোনা এদিকে ।

শোনা যায় ডাকাত মনোহর ছিল অকৃতদার।একবার ডাকাতি করে ফেরার সময় মনোহর দেখে যে জঙ্গলে এক মহিলা বাঘের হানায় মৃত হয়ে পড়ে আছেন। পাশেই জীবিত শিশু। মনোহর তখন সন্তান স্নেহে এই শিশুটিকে মানুষ করে এবং
ধীরে ধীরে নিজেও বদলাতে শুরু করে।। পরবর্তীতে শেষ জীবনে ডাকাতি ছেড়ে কৃষি কাজে মন দেয় পাশাপাশি চলে মাতৃ আরাধনা।

জনশ্রুতি আছে বৃদ্ধ বয়সে সে বহু মোহর আর সোনা রুপো দিয়ে যায় জন কল্যাণ মূলক কাজের জন্য। সেই অর্থে কাটানো হয় একাধিক পুকুর। আজও একটি পুকুর ও সেই সংলগ্ন রাস্তা মনোহর নামে পরিচিত।

আগামী অমাবস্যায় থাকছি তারাপীঠে গ্রহ দোষ খণ্ডন অনুষ্ঠানে। প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।আবার ফিরে আসবো এমনই কোনো ঐতিহাসিক কালী মন্দির ও সেই মন্দিরের দেবী মাহাত্ম নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।
ধন্যবাদ।