দেবী মাহাত্ম – বিষ্ণুপুর কালী মন্দিরের ইতিহাস

114

পঞ্জিকা অনুসারে অম্বুবাচি এবং আষাড় মাসের অমাবস্যার আর হাতে গোনা কটা দিন বাকি। আর অমাবস্যা মানেই কালী সাধনা এবং তন্ত্র স্বাধনার শ্রেষ্ঠ সময়।কালী বলতেই মাথায় আসে আদ্যাশক্তি মহামায়ার কৃষ্ণবর্ণা, উলঙ্গিনী রণচণ্ডী রূপ। কালী মায়ের প্রতি সাধারণ ভক্তদের শ্রদ্ধা খানিকটা ভয় মিশ্রিতও বটে। তবে তান্ত্রিক এবং দস্যু দের কাছে মা কালী তাঁদের মূল আরাধ্যা দেবী। এঁনারা মূলত পুজো করেন শশ্মানকালী দেবীর। পশ্চিমবঙ্গের কালী পুজোর ইতিহাস ঘাটলে উঠে আসবে অনেক স্মশান কালী মন্দিরের কথা। আজকের পর্বে এমনই এক কালী ক্ষেত্র নিয়ে আজ লিখবো।দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাড় বিষ্ণুপুর অঞ্চলে আদি গঙ্গার পাড়ে প্রায় কয়েকশো বছর আগে তৈরি হয়েছিল এক কালী মন্দির। শোনা যায়, এক সময়ে এটি ছিল শশ্মান ভূমি। দুর্গম এই স্থান ছিলো ডাকাত, তান্ত্রিক এবং হিংস্র পশুর অবাধ বিচরণ ভূমি।এই স্থানে দেবীর পূজা শুরু করেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী। বিষ্ণুপুরের প্রসিদ্ধ ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান ছিলেন মণিলাল। ছোট থেকেই ধার্মিক এবং সাধক প্রকৃতির বড় হতেই তার মাথায় চাপে তন্ত্র সাধনার নেশা বিষ্ণুপুর শ্মশানেই শুরু করেন তার সাধনা । শোনা যায়, মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েই নাকি এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মণিলাল। স্বপ্নে মা কালী নাকি তাঁর কাছে নিত্য পুজোর ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তন্ত্র মতে ১০৮টি নরমুণ্ড দিয়ে শুরু করেন মা কালীর আরাধনা।শোনা যায় প্রতিটি মুণ্ডুই অপঘাতে মৃত ব্যক্তির। রতৈরী হয় পঞ্চ মুণ্ডির আসনও।সে সব আজও আছে।যদিও বর্তমানে দেবী এখানে করুণাময়ী কালী রূপে পূজিতা। অতীতের টালির চালের মন্দির এখন পাকা বাড়ি। মণিলাল চক্রবর্তী প্রয়াত হওয়ার পরে তার বংশের লোকেরা ধারাবাহিক ভাবে পুজো সামলাচ্ছেন।দেবী পুজোর বাকি অংশ জনসমক্ষে হলেও তান্ত্রিক পদ্ধতিতে উপাসনার মূল অংশ হয় রুদ্ধ দ্বারের ভিতরে। আজও লোকমুখে শোনা যায়, রাত হলেই নাকি এ তল্লাটে ঘুরে বেড়ায় অপঘাতে মৃত ব্যক্তিদের অশরীরী আত্মা।ঘটে বহু অলৌকিক ঘটনা।সামনেই আসন্ন আষাড় অমাবস্যা ও অম্বুবাচি সেই সময়ে গ্রহ দোষ খন্ডনের আদৰ্শ সময়।চলতে থাকবে দেবী মাহাত্ম নিয়ে আলোচনা। বহু এমন রহস্য ময় সাধক সাধিকা ও মন্দিরের কথা আপনাদের জানাবো।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।