বিশেষ পর্ব – চরক উৎসব

108

বাংলার নববর্ষের সূচনা হয় চরক উৎসব দিয়ে আজকের পর্বে এই চরক উৎসব নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপনাদের সামনে আনবো|চরক মূলত বাংলার লৌকিক উৎসব হলেও পুরানে এর উল্লেখ আছে , লিঙ্গ পুরানে স্পষ্ট বলা আছে চৈত্র মাসে শিবকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্য নিয়ে করা নাচ গানের প্রথাকে বলে চরক|আবার অন্য একটি তথ্য অনুসারে বানরাজ দ্বারকাধীশ কৃষ্ণর কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তার আরাধ্য মহাদেবকে নিজ রক্ত নিবেদন করে তুষ্ট করেন অমরত্ব লাভের আশায় সেই সাধনাকে স্মরণ করা হয় চরক উৎসবের মাধ্যমে।লোকমুখে শোনা যায় যে ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা প্রথম করেছিলেন এই পুজো এবং ক্রমে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সারা বাংলা জুড়ে|এই চরক স্থান বিশেষে কোথাও নীল পুজো কোথাও গম্ভীরা কোথাও গাজন উৎসব , তবে উদ্দেশ্য একই শিবকে তুষ্ট করা ও তার আশীর্বাদ নিয়ে নতুন বছর শুরু করা|এককালে সাধু সন্ন্যাসীরা বিরাট শোভাযাত্রা বের করতো চরক উপলক্ষে, শরীরে তীক্ষ্ণ অস্ত্র বিঁধিয়ে দেয়া থেকে আগুন ঝাঁপ, কাঁটা ঝাঁপ, বঁটি ঝাঁপ অনেক রীতিই পালন হতো|গ্রামবাংলায় আজও চৈত্রের শুরু থেকেই ধ্বনিত হয় ‘বাবা তারকনাথের চরণে সেবা লাগে’। সমাজের প্রান্তিক স্তরের নারী-পুরুষের একাংশ সন্ন্যাস পালন করেন। কেউ কেউ আবার শিব-পার্বতী সেজে হাতে ‘ভিক্ষাপাত্র’ নিয়ে বের হন।কিছু অঞ্চলে চরকের মেলাও বসে যা চলে পয়লা বৈশাখ অবধি|আমাদের বাংলায় চৈত্র সংক্রান্তি মানেই চরক উৎসব, এখন চরক উৎসবের সেই জৌলুস আর নেই শহর ও মফস্সল থেকে ক্রমশঃ লুপ্ত হচ্ছে এই ধার্মিক উৎসব তবে এখনো জেলায় বিশেষত গ্রাম অঞ্চলে চোখে পরে চরকের নানা রীতি নীতি।আপনাদের সবাইকে জানাই চরক উৎসবের অনেক শুভেচ্ছা ও নববর্ষর আগাম শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।ফিরে আসবো পরের পর্বেপয়লা বৈশাখের বিশেষ পর্ব নিয়ে।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।