নদিয়া জেলায় চাকদা থেকে অল্প দূরেই বাংলার অন্যতম প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক জগন্নাথ মন্দিরটি অবস্থিত।এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা চৈতন্য মহাপ্রভুর অন্যতম পারিষদ জগদীশ পণ্ডিত স্বয়ং। আজকের পর্বে এই জগন্নাথ মন্দির নিয়ে লিখবো । জানাবো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। গৌরাঙ্গ মহাপ্রভু তখন সপারিষদ নিলাচলে অবস্থান করছেন। প্রথা অনুসারে সেবার জগন্নাথ দেব যখন নবকলেবর ধারণ করেন।তখন জগদীশ পণ্ডিত পুরীর জগন্নাথ দেবের পরিত্যক্ত পুরোনো দারুময় বিগ্রহটি সংগ্রহ করেন এবং পুরীধাম থেকে বহন করে নবদ্বীপের উদ্দেশে যাত্রা করেন। তার উদ্দেশ্য ছিলো বিগ্রহ পুনঃ প্রতিষ্ঠা করা। বিশাল বিগ্রহ দণ্ডে ঝুলিয়ে দুজনে কাঁধে করে বয়ে নিয়ে চলেছেন। স্বাভাবিক ভাবেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করার ফলে ক্লান্ত হয়ে পড়লেন এবং এই স্থানে রাত্রি যাপন করলেন।পরদিন সকালে জগন্নাথ দেবকে কাঁধে তুলবার সময় আর ওঠাতে পারলেন না। কাঠের মূর্তি যেনো পাথরের থেকেও বেশি ভারী হয়ে গেছে কোনো যাদু বলে।দৈববাণী হল যে আমি এখানেই অবস্থান করব। সেই থেকে জগন্নাথ এখানেই আছেন।এখানেই তার মন্দির নির্মাণ হয় জগদীশ পণ্ডিত তার বাকি জীবন এখানেই বসবাস করে জগন্নাথ সেব করেন।স্বয়ং শ্রীচৈতন্যদেব ও শ্রীনিত্যানন্দপ্রভু এখানে পদার্পণ করে ছিলেন।পূর্বে মন্দির সংলগ্ন একটি সুপ্রসিদ্ধ দোলমঞ্চও ছিল।যা এখন প্রায় ধ্বংস প্রাপ্ত।সুভদ্রা ও বলরাম বিহীন জগন্নাথ দেবের কাঠের বিগ্রটির উচ্চতা ৪ ফুট ।পুরীধাম থেকে জগন্নাথ দেবের বিগ্রটি বহন করে আনবার জন্য জগদীশ পণ্ডিত যে বড় লাঠিটি ব্যবহার করেছিলেন সেটি এখানে আজও সযত্নে রক্ষিত আছে।জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমায় জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা,পৌষমাসের শুক্লা তৃতীয়া তিথিতে জগদীশ পণ্ডিতের তিরোভাব উৎসব এখানে নিষ্ঠা সহকারে পালন করা হয়।বহু এমন ঐতিহাসিক মন্দির নিয়ে আলোচনাবাকি আছে। চলতে থাকবে এই ধারাবাহিক অনুষ্ঠান। ফিরে আসবো। পরের পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।