দেবী মাহাত্ম- পাথুরিয়া ঘাটার কালী

211

যে শহরের নামই দেবী কালীর নামে। সেই শহরে যে অসংখ্য কালী মন্দির থাকবে সেটাই স্বাভাবিক এবং আমি আগেও কলকাতার কালী মন্দির গুলি নিয়ে অনুষ্ঠান করেছি।কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ সব জায়গায় আছে প্রসিদ্ধ সব কালী মন্দির এবং তাদের নিয়ে রয়েছে বহু গল্প ও জনশ্রুতি। আজ আপনাদের জন্য উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার কালী মন্দিরের কথা নিয়ে এসেছি এই পর্বে।সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসও। খোদ বাঘাযতীনের হাত দিয়ে শুরু পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতির কালীপুজো।পরবর্তীতে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু স্বয়ং সভাপতিত্ব করেছেন এই পুজোর।লোকমুখে এই কালী বড়োকালী নামেই পরিচিত। আকারে তা যে বেশ বড়ো, তাতে সন্দেহ নেই। ৩১ ফুট উঁচু মূর্তির হাতে ৬ ফুটের খড়গ। দক্ষিণা কালীর মতোই এই মূর্তির বামহাতের একটিতে খড়গ অন্যটিতে অসুরমুণ্ড। ডানহাতে বরাভয় মুদ্রা।প্রথমে একটু গোড়ার কথা বলে নেয়া দরকার।পুজোর শুরু হয় স্বদেশি যুগের প্রথম যুগে। তখন অনুশীলন সমিতির শাখা তৈরি হচ্ছিল নানা জায়গায়। এর মধ্যেই ১৯০৮ সালে অতুলকৃষ্ণ ঘোষ এবং যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৈরি হয় পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতি। এই যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ই বাঘাযতীন।তারপর ঘটে যায় আলিপুর বোমা কান্ড । অনুশীলন সমিতি নিষিদ্ধ হয়। গোপনে বিপ্লবী কর্মকাণ্ড চলতেই থাকে। কিন্তু প্রকাশ্যে অনুশীলন সমিতির সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ হয়ে যায় পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতির কাজও।ব্রিটিশ বিরোধী যুদ্ধে ১৯১৫ সালে বুড়িবালামে প্রাণ হারালেন বাঘাযতীন। এরপর ১৯২৮ সালে জেল থেকে মুক্তি পান অতুলকৃষ্ণ। আবার শুরু হয় কালীপুজো। এই ১৯২৮ সালকেই পুজোর শুরু ধরা হয়। ২ বছর পর ১৯৩০ সালে পুজোর সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র।বনেদি বাড়ির পুজো গুলির পাশাপাশি পুরোনো দিনের কলকাতার পুজো আজও বেশ আলোচিত।ফিরে আসবো আগামী পর্বে। দেবী মাহাত্ম নিয়ে। সঙ্গে থাকবে নতুন কোনো দেবী পুজোর কথা। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।