দেবী মাহাত্ম – কলকাতার বনদূর্গা

212

সারা বাংলা জুড়ে রয়েছে অসংখ্য রহস্যময় মন্দির।প্রায় প্রতিটি মন্দির ঘিরে রয়েছে অনেক অলৌকিক কাহিনী ও অদ্ভুত সব ঘটনা এবং চমকপ্রদ সব পুজোর রীতি।কোথাও অধিষ্টান করছেন দেবী কালী কোথাও দূর্গা কোথাও আবার অন্যকোনো রূপ। সেই সব দেবী মহাত্ম নিয়ে এবার থেকে আলোচনা হবে একেকটি পর্বে। আজ শুরুতে লিখবো দক্ষিণ কলকাতার এক অদ্ভুত বন দুর্গার মন্দির নিয়ে।যে মন্দিরে দেবীর পুজোয় ব্যবহৃত হয় রাশি রাশি হাঁসের ডিম।কলকাতার বিজয়গড়-শ্রীকলোনিতে অবস্থিত বারো ভূত বা দ্বাদশ অবতার মন্দির।বহুকাল থেকেই এই মন্দিরে বনদুর্গা পূজিতা হন।তাকে অনেকেই বুড়িমা বলেন আবার অনেকের কাছে তিনি লৌকিক দেবী বন দেবী।বহু মানুষ মনে করেন বনদুর্গার এই মন্দির শতাব্দী প্রাচীন।দেবী এখানে পূজিত হন হাঁসের ডিমেই। মকর সংক্রান্তির দিন গামলা গামলা হাঁসের ডিম দফায় দফায় দেওয়া হয় দেবীর পুজো। শুধু মকর সংক্রান্তি নয়। প্রতিটি অমাবস্যা তিথিতেও হয় ধুমধাম করে দেবীর পুজো।তবে নৈবেদ্য হিসেবে হাঁসের ডিম থাকবেই।বনদুর্গা ও তাঁর পুজোর নৈবেদ্য নিয়ে একাধিক গল্প প্রচলিত আছে।বনের দেবী বলে তাঁর ভোগে দেওয়া হয় ডিম এটা যেমন অনেকে মনে করেন । আবার একটি জনশ্রুতি অনুসারে একবার এক ভিখারিনীর বেশে এক গরীব ঘরে গিয়েছিলেন দেবী।দরিদ্র পরিবারের সেই গৃহকর্ত্রী ভিখারিনীকে নিরাশ করেননি। ঘরে থাকা একমুঠো চাল আর পোষা হাঁসের ডিম দিয়েই অতিথি আপ্যায়ন করেছিলেন। সেই ভোগে তৃপ্ত হন দেবী। তারপর থেকেই নৈবেদ্যই স্থান পায় ডিম। সেই পরম্পরা আজও চলছে।পুজোয় নৈবেদ্য হিসেবে জমা লক্ষ লক্ষ ডিম প্রসাদ হিসেবে ভক্তদের দেওয়া ছাড়াও আশপাশের অনাথ আশ্রম, বৃদ্ধাশ্রম ও দরিদ্র নারায়নের মধ্যেবিলি করা হয়।বহু এমন অদ্ভুত সব মন্দির ও সেই মন্দিরের দেবী মাহাত্ম নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বগুলিতে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।