কালিকা পুরান – মহিষাসুর বধ

663

দেবী দুর্গার মহিষাসুর বধ সম্পর্কে কম বেশি আমরা সবাই জানি কিন্তু কালিকা পুরানে দেবী কোন কোন রূপে কোন সময়ে মহিষাসুরকে বধ করেছিলেন তার বিস্তারিত বিবরণ আছে|আসুন আজ জেনে নিই কালীকা পুরান অনুসারে মহিষাসুর বধ পর্ব|কালীকা পুরানে দেবীর সৃষ্টি, তার রূপস্বজ্জা, অস্ত্র প্রাপ্তি, রনক্ষেত্রের বিবরণ, যুদ্ধের সময়কাল সব বিস্তারিত ভাবে লিপিবদ্ধ আছে|পুরান অনুসারে একশতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের পর দেবতাদের পরাস্ত করে মহিষাসুর দেবতাদের তাড়িয়ে দিলেন স্বর্গ থেকে। অধিকার করলেন স্বর্গলোক। মুনি ঋষিরাও রেহাই পেলেন না তার অত্যাচার থেকে।নিজেই অধিকার করে বসলেন ত্রিভুবন|ত্রিলোকের কোনও পুরুষই তাকে পরাভূত করতে পারবে না এই ছিলো ব্রম্হার বর|বিতাড়িত দেবতারা ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বরের শরণাপন্ন হলেন এবং তাদের মুখে মহিষাসুরের ভয়াবহ অত্যাচারের কাহিনি শুনে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর ক্রোধান্বিত হলেন। ত্রিদেবের ক্রোধাগ্নির প্রচণ্ড তেজ ও দেবতাদের পুঞ্জীভূত রোষ সম্মিলিত হয়ে হিমালয়ের শীর্ষে মহর্ষি কাত্যায়নের আশ্রমে আবির্ভূতা হলেন দেবী কাত্যায়নী|ঋষি কাত্যায়নের আশ্রমে দশভূজার সৃষ্টিকার্য হয়েছিল বলে দেবী দুর্গার আর এক নাম ‘কাত্যায়নী’।কালীকা পুরাণ অনুসারে, শিবের তেজ থেকে দেবীর মুখ, যমের তেজে চুল, বিষ্ণুর তেজে বাহু, ব্রহ্মার তেজে পদযুগল, অগ্নির তেজে ত্রিনয়ন ও অন্যান্য দেবতার তেজে দুর্গার সৃষ্টি হয়। দেবী দুর্গা প্রবল পরাক্রমে এবং কৌশলে পরাজিত হল মহিষাসুরের বাহিনীকে। এরপর শুরু হল মহিষাসুর এবং দেবী দুর্গার দ্বন্দ্ব যুদ্ধ। প্রবল যুদ্ধে কম্পিত হয়ে উঠল ত্রিভূবন। অবশেষে যুদ্ধে পরাজিত মহিষাসুরের গলায় পা রেখে ত্রিশুল দিয়ে তার বক্ষ বিদীর্ণ করে তাকে বধ করেন দেবী মহিষাসুরমর্দিনী|কালিকা পুরাণ অনুসারে দেবী তিনবার মহিষাসুরকে বধ করেন। আদি সৃষ্টি কল্পে অষ্টাদশভূজা উগ্রচণ্ডী রূপে মহিষাসুরকে বধ করেন। দ্বিতীয় সৃষ্টি কল্পে ষোড়শভুজা ভদ্রকালী রূপে মহিষাসুরকে বধ করেন। আবার তৃতীয় সৃষ্টি কল্পে দশভূজা দেবী দুর্গা রূপে মহিষাসুরকে বধ করেন। মহিষাসুর তৃতীয়বার বধ হওয়ার পর দেবীর আশীর্বাদে তিনি চিরতরে দেবীর পদতলে স্থান পান।ফিরে আসবো পরের পর্বে|কালীকা পুরান নিয়ে|থাকবে আরো অনেক পৌরাণিক বিষয় নিয়ে আলোচনা|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|