দশ অবতার রহস্য – মৎস অবতার

298

গীতায় ভগবান স্বয়ং বলেছেন যখনই অধর্ম জগৎ কে গ্রাসঃ করবে তখনই তিনি ধর্মকে পুনস্থাপন এবং অধর্ম কে পরাজিত করতে অবতীর্ণ হবেন|দশটি ভিন্ন ভিন্ন অবতারের উল্লেখ পাওয়া যায় শাস্ত্রে যার মধ্যে একমাত্র কল্কি অবতারের আগমন এখনো বাকি আছে বাকি অবতারেরা এসেছেন এবং তাদের কাজ করে আবার ফিরে গেছেন|ভগবানের সেই লীলা সেই দশ অবতারের কথা বলবো পবিত্র এই দামোদর মাসে|আজ শুরু করবো মৎস অবতার দিয়ে| আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে সত্যব্রত নামে এক ধার্মিক রাজা ছিলেন । তাঁর রাজত্বকালে হঠাৎ পৃথিবীতে নানারূপ অন্যায় – অত্যাচার দেখা দেয় ।অধর্ম ও মিথ্যা জগৎ কে গ্রাস করে|রাজা তখন জগতের কল্যাণের জন্য ঈশ্বরের করুণা প্রার্থনা করেন । জলাশয়ে স্নানের সময় একদিন রাজা সত্যব্রতের নিকট একটি ছোট মাছ এসে প্রাণ ভিক্ষা চায় । রাজা কমণ্ডলুতে করে মাছটিকে বাড়ি নিয়ে এলেন তারপর দিনে দিনে মাছটির আকার ভীষণভাবে বাড়তে থাকে । তাকে পুকুর , সরােবর , নদী , যেখানেই রাখা হয় , সেখানেই আর ধরে না। তখন রাজা বুঝলেন ইনি নিশ্চয়ই সাধারণ কোনো মাছ নন| তখন রাজা মাছটির সামনে তার ইষ্ট দেব নারায়ণের স্তব করতে শুরু করলেন । তারপর ধীরে ধীরে প্রকট হলেন স্বয়ং নারায়ন|মৎসরূপী নারায়ণ রাজাকে বললেন,সাতদিনের মধ্যেই জগতের প্রলয় হবে। সে সময় তােমার ঘাটে এসে একটি স্বর্ণতরী ভিড়বে।তুমি সব রকমের জীবদম্পতি , খাদ্য – শস্য ও বৃক্ষবীজ সংগ্রহ করে তাদের নিয়ে সেই নৌকায় উঠবে । আমি তখন শৃঙ্গধারী মৎস্যরূপে আবির্ভূত হবাে । তুমি তােমার নৌকাটি আমার শৃঙ্গের সঙ্গে বেঁধে রাখবে ।আমি তোমায় রক্ষা করবো| যথা সময়ে মহাপ্রলয় শুরু হলাে । রাজা মৎসরূপী ভগবান শ্রীবিষ্ণুর নির্দেশ মতাে কাজ করলেন । ধ্বংস থেকে অক্ষা পেল তার নৌকা । প্রলয় শেষে রাজা জীব ও উদ্ভিত নিয়ে আবার নতুন করে জগৎ সংসার সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু করলেন এবং এই ভাবেই মৎস্য অবতাররূপে ভগবান শ্রীবিষ্ণু সৃষ্টিকে রক্ষা করলেন । আগামী পর্বে ভগবানের পরবর্তী অবতার এবং তার বিশেষ লীলা নিয়ে আবার ফিরে আসবো|চলতে থাকবে এই পৌরাণিক আলোচনা|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|