সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বেলপাতা শিবের অত্যন্ত প্রিয়। শ্রাবণ মাসে শিবের বিশেষ পূজার্চনার যে নিয়ম রয়েছে তার অন্যতম উপাদান বেলপাতা,এমনিতে শিবের কোনও পুজোই বেলপাতা ছাড়া পূর্ণ হয় না। শ্রাবণ মাসে বেলপাতা ছাড়া ভুলেও শিবের পুজো করবেন না। একটি বেলপাতাতেই শিব প্রসন্ন হতে পারেন আপনার ওপর কিন্তু কিভাবে টা সম্ভব জানাবো আজকের পর্বে|শিবের প্রিয় বেলপাতার উৎপত্তি সম্পর্কে স্কন্দপুরাণে একটি কাহিনি প্রচলিত আছে। পুরাণ অনুযায়ী একবার দেবী পার্বতী নিজের ললাট থেকে ঘাম মুছে ফেলেন, তাঁর কয়েক ফোঁটা ঘাম মন্দার পর্বতে গিয়ে পড়ে। সেখান থেকে বেল বৃক্ষের উৎপত্তি।বেল গাছের শিকড়ে গিরিজা, গুড়িতে মহেশ্বরী, শাখায় দক্ষয়ায়নী, পাতায় পার্বতী ও ফুলে গৌরীর বাস মনে করা হয়।আবার আয়ুর্বেদ মতে বেলপাতার মধ্যে রয়েছে এমন ভেষজ গুন যা যেকোনো রকম বিষক্রিয়াকে দমন করতে পারে|শিব যখন সমুদ্র মন্থন থেকে উঠে আসা বিষ পান করেছিলেন এবং বিষের প্রভাবে নীল কণ্ঠ হয়েছিলেন তখন বিশেষর প্রভাব কে সীমিত রাখতে বেলপাতা প্রয়োগ হয়েছিলো বলেও অনেকের ধারনা|আবার বেলপাতা সংযম ও ধ্যানের প্রতীক|আসুন এবার দেখে নিই কি ভাবে বেলপাতা ব্যবহার করবেন এই শ্রাবন মাসের শিব পুজোয়|উল্টো বেলপাতা, অর্থাৎ বেলপাতার যে অংশটি মসৃণ, তা শিবলিঙ্গ স্পর্শ করিয়ে অর্পণ করা উচিত।অনামিকা, বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ ও মধ্যমা আঙুল দিয়ে ধরে বেলপাতা অর্পণ করবেন। বেলপাতার মধ্যবর্তী পাতাটি ধরে অর্পণ করতে হয়। শুধু বেলপাতা অর্পণ করবেন না। বেলপাতার সঙ্গে সঙ্গে জলধারাও অর্পণ করতে থাকুন।তিন পাতা বিশিষ্ট বেলপাতা অর্পণ করা উচিত। ১ বা দুই পাতা বিশিষ্ট, কাটা-ফাটা পাতা কখনও অর্পণ করবেন না।কিছু তিথিতে বেলপাতা তুলতে নেই। চতুর্থী, অষ্টমী, নবমী, চতুর্দশী, অমাবস্যা, সংক্রান্তি ও সোমবার বেলপাতা তুলতে নেই। এমন পরিস্থিতিতে পুজো থেকে একদিন আগে বেলপাতা তুলে রেখে নিন।কথিত আছে শিবকে বেলপাতা অর্পণ করলে ভক্তদের সমস্ত দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। ভোলানাথ তাঁর সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ করেন।শাস্ত্র মতে শিব পুজো করুন|ফিরে আসবো আগামী পর্বে শিব ও শ্রাবন মাস সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|