শ্রী কৃষ্ণের হাতে বাঁশি আমরা সবাই দেখেছি কিন্তু বাঁশির ও ভিন্ন ভিন্ন রূপ আছে আধ্যাত্মিক তাৎপর্য আছে|আজ পুরান কথায় সেই কথাই বলবো|শ্রীকৃষ্ণ তিন প্রকারের বাঁশী ব্যবহার করেন। তার একটিকে বলা হয় বেণু, অন্যটি মুরলী এবং তৃতীয়টি বংশী। বেণু অত্যন্ত ছোট, ছয় ইঞ্চির বেশী দীর্ঘ নয়, এবং তাতে ছয়টি ছিদ্র থাকে। মুরলীর দৈর্ঘ্য প্রায় আঠারো ইঞ্চি। তার একপ্রান্তে একটি ছিদ্র থাকে এবং তার গায়ে চারটি ছিদ্র থাকে। এই মুরলী অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর সুর সৃষ্টি করে। বংশী প্রায় পনেরো ইঞ্চি লম্বা, এবং তাতে নয়টি ছিদ্র থাকে।শ্রীকৃষ্ণ প্রয়োজন অনুসারে এই তিন রকমের বাঁশী বাজান।শ্রীকৃষ্ণের আর একটি বংশী আছে যা আরও লম্বা, যাকে বলা হয় মহানন্দ বা সম্মোহনী বা আকর্ষনী এই বাঁশী কখনো কখনো মণিরত্ন খচিত থাকে, কখনো তা মর্মর দিয়ে তৈরী হয় এবং কখনো কখনো বাঁশ দিয়ে তৈরী হয়। বাঁশী যখন মণিরত্ন দিয়ে তৈরী হয় তখন তাকে বলা হয় সম্মোহনী। আর যখন তা স্বর্ণ দিয়ে তৈরি হয়, তাকে বলা হয় আকর্ষণী।বাঁশির সাথে কৃষ্ণর সম্পর্ক নিয়ে একটি সুন্দর ঘটনার উল্লেখ করা যায় একেবার ঈর্ষা বসত গোপিনীরা অসতর্ক মুহূর্তে চুপি চুপি বাঁশিটি কে চুরি করলেন।বাঁশি গোপীদের বলিলেন : ” এভাবে আমাকে আপনারা কৃষ্ণের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত করলেন কেন ?” গোপীরা বলিলেন : ” তোমার এমন কি গুণ আছে যে , তুমি সর্বদা কৃষ্ণের হাতে হাতে ফের আর তাঁর অধর স্পর্শ করে থাকো? বাঁশি বললো গুণের কথা ছেড়ে দিন, আমার তো কোন অস্তিত্ব নেই । কারণ , আমার ভিতরে যে শাঁস ছিল যা বের করে ফেলা হয়েছে। ফলে আমার নিজস্ব কোন সত্তাই এখন আর নেই। আমার গোটা শরীরটাই ফোঁপরা- ফাঁপা । সুতরাং আমার আমিত্ব বলে আর কিছু নেই । আমার যা- কিছু সব তাঁর । আমার নিজের কোন সুরও নেই তানও নেই । কানাইয়ার সুর , কানাইয়ার তানই আমার সুর আমার তান। তিনি যে ভাবে আমাকে বাজান , আমি সে ভাবেই বাজি । শরণাগতকে তিনি কখনো পরিত্যাগ করেন না । আমার সর্বস্ব তাঁকে অর্পণ করে আমি তাঁর আশ্রয় নিয়েছি। তাই তিনি আমাকে তাঁর অধরে রাখেন তাই আমি তার এতো প্ৰিয়|গোপিনীরা কথার মর্মার্থ বুঝলেন|নিজের সব অহং বিসর্জন দিয়ে সম্পূর্ণ ভাবে ভগবানের চরনে সমর্পন করলে তবেই তার সম্পূর্ণ কৃপা পাওয়া যায়|আরো অনেক শাস্ত্রের কথা ও পৌরাণিক তথ্য নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে|পড়তে থাকুন|আগামী অমাবস্যা তিথিতে থাকছি তারাপীঠে মহা যজ্ঞে|যারা গ্রহ গত সমস্যা নিয়ে কথা বলতে চান|যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|