বাংলার কালী – দুর্লভা কালী, বর্ধমান

484

কৌশিকী অমাবস্যার বিশেষ পুজো ও গ্রহ দোষ খণ্ডন অনুষ্ঠানের আর বেশি দেরি নেই, ব্যস্ততার মাঝেই আজ কলম ধরেছি আপনাদের জন্যে, আজ আপনাদের নিয়ে যাবো বর্ধমান, বর্ধমানের প্রসিদ্ধ কালী মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম লাকুড্ডি দুর্লভা কালী।বর্ধমানের দুর্লভা কালীর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে রাজ কাহিনী ও নানা লোককথা তার কিছু আজকে বলবো আপনাদের বাংলার কালীর এই পর্বে যে অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে গড়ে ওঠে এই প্রাচীন কালী মন্দির সেই ঐতিহাসিক ঘটনার প্রধান দুটি চরিত্র হোলেন প্রখ্যাত তান্ত্রিক সাধক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারি ও বর্ধমানের মহারাজা তেজচাঁদ|জনশ্রুতি অনুসারে ঘটনাটি অনেকটা এই রকম|লোকমুখে তাঁর নানান অলৌকিক ক্ষমতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। সেই ক্ষমতার কথা শুনে একদিন রাত্রে বর্ধমানের মহারাজ তেজচাঁদ মন্ত্রী সান্ত্রীদের নিয়ে সেখানে গেলেন গোকুলানন্দ কাছে|চারদিকে ঘন জঙ্গল। তার মাঝে বসে কালী সাধনা করছেন তান্ত্রিক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী। বর্ধমানের মহারাজ দেখতে চান তান্ত্রিকের অলৌকিক ক্ষমতা। সেদিন ঘোর অমাবস্যা। রাজা জানতে চাইলেন, আজ কি তিথি? তান্ত্রিক জানালেন, আজ পূর্ণিমা। রাজা বললেন, আমাকে পূর্ণিমার চাঁদ দেখাতে পারেন।তান্ত্রিক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী বুঝলেন, রাজা তাঁর ক্ষমতার পরীক্ষা নিতে এসেছেন। মৃদু হাসলেন গোকুলানন্দ। চারদিক জ্যোৎস্না আলোকিত হয়ে উঠলো। আকাশের দিকে আঙুল দেখিয়ে তান্ত্রিক বললেন, ওই পূর্ণিমার চাঁদ। দেখুন মহারাজ|বিস্মিত চোখে তন্ত্র শক্তির অদ্ভুত প্রয়োগ দেখলেন রাজা|পরবর্তীতে মহারাজ তেজচাঁদ কালী মন্দির করে দিলেন। সেদিন থেকেই বর্ধমানের লাকুড্ডির দুর্লভা কালীবাড়িতে নিত্য পুজো চলছে।এই কালীমন্দিরে ঘটের আবাহন বা বিসর্জন নেই। ঘট ছাড়াই শুধু বিগ্রহের নিত্য পূজা হয় এই কালী মন্দিরে।বর্ধমানের রাজারা এই মন্দিরে ভোগঘর তৈরি করে দেন। পুজোর ব্যয়ভার বহন করতেন তাঁরাই। এখানে আজও নিত্য পূজার পাশাপাশি দেবীকে অন্নভোগ নিবেদন করা হয়।দীপান্বিতা কালীপুজোয় অগণিত ভক্তের সমাগম হয় মন্দিরে। মনে করা হয় দেবীর দর্শন পাওয়া অতি দুর্লভ। তাই নাম দুর্লভা কালী। প্রায় আড়াইশো বছর আগে তান্ত্রিক গোকুলানন্দ ব্রহ্মচারী পাশের জলাশয়ে স্নান করতে নেমে একটি পাথর পান।সেই পাথরকেই মা কালী রূপে পুজো করেন তিনি। সেই পাথর খণ্ড প্রতিষ্ঠিত হয় রাজার তৈরি করে দেওয়া মন্দিরে। পরে কালীমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হলেও আজও সেখানে সেই পাথর খণ্ড সামনে রেখেই পুজো করা হয়। সাধক কমলাকান্তও এখানে তন্ত্র সাধনা করতে আসতেন।আপাতত আজ বাংলার কালী নিয়ে এই ধারাবাহিক লেখা এখানেই শেষ করলাম|কৌশিকী অমাবস্যা উপলক্ষে মা হৃদয়েশ্বরী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের বিশেষ পুজোয় আপনাদের স্বাগত|পুজোয় যোগ দিতে বা গ্রহ দোষ খণ্ডন করাতে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|