দেবতাদের অস্ত্র শস্ত্র – বজ্র

1307

সনাতন ধর্মের দেবতাদের অনেক ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করতে দেখা যায়, যেমন – আগ্নেয়াস্ত্র, ব্রহ্মাস্ত্র, গরুড়াস্ত্র, কৌমদকী, নারায়ণাস্ত্র, পশুপতাস্ত্র, শিবধনু, সুদর্শন চক্র, ত্রিশূল, বৈষ্ণবাস্ত্র, বরুণাস্ত্র ও বায়বাস্ত্র।যেকোনো যুদ্ধে, যেকোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি তে ইন্দ্র এর সাথে সদা থাকে তার বজ্র |এই জাতীয় অস্ত্র আর কোনো দেবতা কে ব্যবহার করতে দেখা যায়না, হয় তো তিনি দেবরাজ তাই |অসীম শক্তিশালী এই অস্ত্র বহু শত্রুর বিনাশ করে একাধিক বার সৃষ্টি রক্ষা করেছে এই বজ্র যা একবার অসুর তৃষিরা সুর এর সাথে যুদ্ধে ধ্বংস হয় |

আজ এই পর্বে দেবরাজ ইন্দ্রের অস্ত্র বজ্র নিয়ে আলোচনা করবো, অসুর দের মধ্যে এক ভয়ঙ্কর অসুর ছিলো বৃত্যা সুর যার সাথে ভীষণ যুদ্ধ হয়েছিলো দেবরাজ ইন্দ্রের|এই যুদ্ধের সাথে জড়িত বজ্র নির্মাণের ইতিবৃত্ত|

ত্রিশিরাকে বধ করলে তার পিতা ত্বষ্টা ত্রুদ্ধ হয়ে ইন্দ্রকে বিনষ্ট করার জন্য অগ্নিতে আহুতি দিয়ে বৃত্রাসুরকে উৎপন্ন করেন। বহুকাল যুদ্ধ করেও বিত্রাসুরকে পারাজিত করতে পারলেন না দেবতারা|অবশেষে ঋষিরা বৃত্রকে ইন্দ্রের সঙ্গে সন্ধি করার প্রস্তাব দিলে বৃত্র সব শুনে বললেন যে, তিনি তাতে রাজি আছেন। কিন্তু ঋষিদের কথা দিতে হবে যে, শুষ্ক বা আদ্র্র বস্তু দ্বারা, প্রস্তর কাষ্ঠ বা অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা, দিবসে বা রাত্রিতে ইন্দ্র অথবা অন্যদেবতারা ওঁকে বধ করতে পারবেন না। ঋষিরা তাতে রাজি হলে সন্ধি স্থাপিত হল।অর্থাৎ দেবতা দের সব অস্ত্র সস্ত্র বৃত্যাসুর কে বধ করার ক্ষমতা হারালো|

এদিকে ক্রমে বৃত্যাসুর যখন অত্যাচারি হয়ে উঠতে লাগলো এবং এক সময় তাকে বধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় রইলো না, কিন্তু অস্ত্র নেই | তখন ঋষিরা একটা উপায় বাতলালেন | কোনো ত্যাগী এবং তেজময় সন্যাসীর অস্থি থেকে অস্ত্র তৈরী করে বৃত্যাসুর কে বধ করতে হবে

ত্যাগের জন্য সদা প্রস্তুত সেই বৈদিক ঋষি হলেন দধীচি | ভগবত্‍ পুরাণ অনুযায়ী তিনি অথর্বন ঋষি ও চিতির পুত্র ছিলেন তিনি|দেবতারা দধীচীর কাছে তার অস্থি চাইলেন | এই অনুরোধ শুনে দধীচি নামক এই মহামুনি সাধক আত্মত্যাগ করতে রাজি হন। দধীচিকে হত্যা করা হয় এবং তার দেহের হাড় দিয়ে বৃত্তাসুরকে হত্যার জন্য ইন্দ্রের জন্য একটি বিশেষ বজ্র তৈরি করা হয়|তার পর ইন্দ্র ও বৃত্তাসুরের মধ্যে ভীষণ যুদ্ধ হলো |অবশেষে সেই বজ্র দিয়ে ইন্দ্র বৃত্যাসুর কে যুদ্ধে পরাজিত করেন এবং হত্যা করেন |

বজ্র মূলত অনন্ত শক্তি ও অসীম দৃঢ়তার প্রতীক যা দেবরাজ ইন্দ্রকে কঠোর হাতে স্বর্গ রাজ্য পরিচালনা করতে এবং দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালন করতে সাহায্য করে|আগামী পর্বে আবার নতুন কোনো অস্ত্রের কথা লিখবো|পড়তে থাকুন আর যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রশ্ন বা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে চাইলে ফোন করুন উল্লেখিত নাম্বারে আপাতত অনলাইনে ভাগ্যবিচার ও প্রতিকার প্রদানের সহজ ব্যবস্থা রয়েছে এবিষয়ে সরাসরি কথা বলতে পারেন আমার সাথে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|