মন্দির রহস্য – কলকাতায় বনবিবির মন্দির

1038

বাংলায় পূজিত লৌকিক দেব দেবী দের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় হলেন বন বিবি, তবে অনেকেই ভাবেন এই বনবিবি মূলত দক্ষিণ বঙ্গের সুন্দর বনের অধিষ্টাত্রী দেবী, মূলত দক্ষিণ রায়ের সাথেই তার নাম উচ্চারিত হয়ে আসছে যুগ যুগ থেকে, বিপদ সংকুল সুন্দরবনের মানুষ যেকোনো বিপদ থেকে বাঁচতে বনবিবির স্মরণ নেন|কিন্তু শুনলে হয়তো অনেকেই অবাক হবেন এই খাস কলকাতা তেই রয়েছে এক বন বিবির মন্দির|কিন্তু কেনো|এই রহস্য নিয়েই লিখবো আজকের পর্বে|

লৌকিক কিংবদন্তী অনুসারে বনবিবি মক্কার এক সুফি ফকিরের কন্যা। ফকিরের দুই বউ। প্রথম বউয়ের দেওয়া শর্তে, ঘটনাক্রমে দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভজ দুই ছেলেমেয়েকে ফকির রেখে আসতে বাধ্য হন গহন বনে । পরে অবশ্য ছেলেটিকে ঘরে নিয়ে যান, ফকির কিন্তু একা মেয়ে বড় হয় জঙ্গলে এক হরিণী-মায়ের কাছে এবং ক্রমে তিনিই হয়ে ওঠেন বনবিবি|এই বনবিবি যথার্থ অর্থে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অদ্ভুত নিদর্শন যাকে হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ ভক্তি করেন|

আসলে এক কালে দক্ষিণের সাগর-ছোঁয়া জল-জঙ্গল বিস্তৃত ছিল আদিগঙ্গার পাড় অবধি যা বয়ে যেতো দক্ষিণ কলকাতার গা ঘেঁষে|খাঁড়ি, বাদাবন আর মউলি-মেছুয়ার জঙ্গলে দাপানো ‘বড় মিঞা’ বা ‘দক্ষিণ রায়’-এর রাজত্ব গড়িয়েছিল এখানেও। সেই দক্ষিণ রায়ের তর্জন-গর্জন থেকে বাঁচাবেন কে, এক বনবিবি ছাড়া তাই এই অঞ্চলেও গড়ে উঠেছিল বনবিবির মন্দির|

বর্তমানে এইসব অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিবর্তন হয়েছে, আধুনিক হয়েছে মানুষের জীবনযাত্রা|কিন্তু এখনো সেই প্রাচীন লৌকিক পরম্পরাকে ধরে রেখেছে এই সুপ্রাচীন বন বিবির মন্দির|

আপাতত এই পর্বে এইটুকুই|আগামী পর্বে লিখবো অন্য কোনো রহস্যময় মন্দিরের কথা|পড়তে থাকুন|যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করতে চাইলে উল্লেখিত নাম্বারে একবার ফোন করে সরাসরি কথা বলতে পারেন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|