অষ্ট লক্ষীর শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
লক্ষীপুজো উপলক্ষে আজ আপনাদের দেবী লক্ষীর আটটি ভিন্ন রূপে ব্যাখ্যা করবো।একত্রে এই রুপ গুলিকে অষ্ট লক্ষী বলা হয়।
১- আদি লক্ষ্মী বা মহালক্ষ্মী — তিনি বিষ্ণুপ্রিয়া। বিষ্ণুর সঙ্গেই তিনি চিত্রিত হন।আদি লক্ষী বা মহা লক্ষী হলো মা লক্ষীর আদি রূপ । এই মা লক্ষী হলেন অফুরন্ত ধনসম্পদের অধিষ্ঠাত্রী|
২. ধনলক্ষ্মী বা ঐশ্বর্য্যলক্ষ্মী — সম্পদ ও সমৃদ্ধির দেবী।এই দেবীর ছটি হাত এবং মূলত লাল শাড়িতেই অধিষ্ঠাত্রী। প্রতিটি হাতে থাকে একে একে চক্র, শঙ্খ, একটি ঘট বা পবিত্র কলসি, তীর ধনুক এবং একটি পদ্ম। সর্বশেষ হাতটি অভয় মুদ্রার ন্যায় রাখা এবং তা থেকে সোনার মোহর বা মুদ্রা উৎপন্ন হয়।
৩.ধান্যলক্ষ্মী—ইনি শস্যর দেবী।শস্য ভালো হয়
আর্থিক কষ্ট লাঘব হয় এই রূপের পুজো করলে|এই দেবী খাদ্যশস্যর প্রতীক।ধান্য লক্ষী দেবীর দুই হাতে থাকে শস্য এবং এই দেবীর পরনে থাকে শস্যের রঙের সবুজ শাড়ি|
৪. গজলক্ষ্মী— গজ বা হাতির সঙ্গে তাঁকে কল্পনা করা হয়। ব্যক্তির শ্রীবৃদ্ধি ঘটে তাঁর কল্যাণে|। এই দেবী হাতির ওপর সরাসরি অধিষ্ঠাত্রী না হলেও, তার চারিদিক বেষ্টিত থাকে হাতি দ্বারা। রাজকীয় ধন সম্পদের প্রতীক এই দেবী। কথিত আছে সমুদ্র মন্থন কালে ভগবান ইন্দ্রের হারিয়ে যাওয়া ধন সম্পদ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এই দেবী|
৫. সন্তানলক্ষ্মী— সন্তানভাগ্য নিরূপণ করেন এই দেবীরূপ। ভালো সন্তান লাভ হয় এই দেবী সন্তুষ্ট হলে।
৬. বীরলক্ষ্মী— সাহসদাত্রী দেবী।সাহস ও আত্মবিশ্বাস যোগান|এই দেবীর আরাধনা মনের শক্তি এবং ধৈর্য্য যোগায় যা জীবনের কঠিন এবং ভালো সময়কে সঠিকভাবে পরিচালনা করার শক্তি যোগায়|
৭. বিদ্যালক্ষ্মী—বিদ্যা লক্ষী জ্ঞানের দেবী। বিদ্যা লাভ হয় এই দেবীর পূজায়|বিদ্যার প্রতীক এই দেবী। সরস্বতী ঠাকুরের মতোই এই দেবী পদ্মের ওপর সাদা শাড়িতে অধিষ্টাত্রী হন|
৮. বিজয়লক্ষ্মী বা জয়লক্ষ্মী— ইনি বিজয়ের অধিষ্ঠাত্রী|বিজয় লাভ হয় এই দেবীর আশীর্বাদে|
এই দেবী সর্বদা বিজয়এর প্রতীক স্বরূপ। কোনো সমস্যার থেকে মুক্তি পেতে বা বড়ো সাফল্য পেতে এই দেবীর পূজা হয়ে থাকে|
অর্থাৎ দেবী লক্ষীর এই প্রতিটি রূপের নিজস্ব ব্যাখ্যা ও পুজোর উদ্দেশ্য রয়েছে।
আগামী পর্বে দেবী লক্ষী সংক্রান্ত আরো অনেক পৌরাণিক এবং শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা নিয়ে ফিরে আসবো।
সবাইকে জানাই লক্ষী পুজোর শুভেচ্ছা।পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।