জয় জগন্নাথ – জগন্নাথদেবের জ্বর এবং চিকিৎসা

20

জয় জগন্নাথ – জগন্নাথদেবের জ্বর এবং চিকিৎসা

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

জগন্নাথ ধাম এবং প্রভু জগন্নাথের দৈনন্দিন জীবন যাপন নিয়ে রয়েছে হাজারো রহস্য। তার ভোগ, সাজসজ্জা,শয়ন এবং রথ যাত্রা সব কিছুতেই রয়েছে একাধিক রহস্য ঠিক স্নানের পর জ্বর আসা বিশ্রাম এবং অসুখের চিকিৎসা নিয়েও অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। আজকের পর্বে জানাবো স্নান যাত্রার পর কি কি ঘটে।

 

আগেই বলেছি প্রতি বছর জ্যেষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথ নিজের ভাই এবং বোনের সঙ্গে একশো আট টি কলসির জলে পবিত্র স্নান করেন।যে স্নান যাত্রা কিছুদিন আগেই অনুষ্ঠিত হলো। এই সময়ে স্নানের কারন গ্রীষ্মের প্রচন্ড দাবদাহ থেকে সুরক্ষিত থাকা। তবে অত্যধিক স্নানের কারণে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা অসুস্থ হয়ে পড়েন।

অতিরিক্ত শীতলতার জন্য জ্বর আসে তাদের।

 

জগন্নাথ দেব বাল্য রূপে পুরীধামে বিরাজমান তাই এই সময়ে অসুস্থ্য বালকের ন্যায় তাদের সেবা করা হয় এবং সুস্থ্য করে তোলা হয়।

 

এই সময়ে একান্তবাসে থাকতে হয় তাঁদের।এই সময়ে পনেরো দিনের জন্য মন্দির বন্ধ করে দেওয়া হয়। কয়েকজন বৈদ্য এই সময়ে ভগবানের চিকিৎসা করেন। অসুস্থ হয়ে পড়ার পর রত্নজড়িত বস্ত্রের পরিবর্তে সুতির শ্বেত বস্ত্র পরিধান করেন তাঁরা। রত্ন এবং স্বর্ণ নির্মিত আভুষণও খুলে রাখা হয়।প্রতিদিনের ভোগের পরিবর্তে ভোজনে দেওয়া হয় ফল, ফলের রস, তরল পদার্থ। পঞ্চম দিন বড় ওড়িয়া মঠ থেকে ফুলেরি তেল আসে, যা দিয়ে হাল্কা মালিশ করা হয়। এর পর রক্তচন্দন ও কস্তুরির প্রলেপ লাগানো হয়। এ সময় তাঁকে হাল্কা খাবার, যেমন, দুধ, ফলের রস ও কয়েকটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ খাওয়ানো হয় রুগী পথ্য রূপে।

 

প্রভু আরেকটু সুস্থ্য হয়ে উঠলে দশম দিনে তাঁকে নীম, হলুদ, বহেড়া, লবঙ্গ ইত্যাদি জড়িবুটির জল দিয়ে নরম মোদক বানিয়ে খেতে দেওয়া হয়।

 

রথযাত্রার একদিন আগে, জগন্নাথ, বলভদ্র ও সুভদ্রা সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁদের মন্দিরের গর্ভগৃহে ফিরিয়ে আনা হয় এবং রাজ রাজকীয় সাজে সাজানো হয়। তারপর তাঁরা রথ যাত্রার জন্য বেড়িয়ে পড়েন।

 

আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান ও সংক্রমক ব্যাধির খেত্রে চোদ্দ দিনের একান্ত বাসের কথা বলে। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে প্রভু জগন্নাথের এই চোদ্দ দিনের একান্ত বাস এবং জ্বরের চিকিৎসা যথেষ্ট তাৎপর্য পূর্ণ।

 

জগন্নাথদেব সংক্রান্ত আরো অনেক এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।