ভক্তের ভগবান – বিষ্ণু ভক্ত শেষ নাগ
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
গরুড় বা সুদর্শনের ন্যায় বিষ্ণু আরো এক একনিষ্ট ভক্ত এবং সর্বক্ষণের সঙ্গী হলেন শেষ নাগ। তিনি পালন কর্তা বিষ্ণুকে তার সৃষ্টি পরিচালনায় সাহায্য করেন আবার অনন্ত সজ্জা রূপে তিনি শ্রী বিষ্ণুর চিরসঙ্গী। শ্রী কৃষ্ণ রূপে যখন শ্রী বিষ্ণু তার তার লীলা করতে ধরাধামে অবতীর্ণ হন তখন তখন শেষ নাগও বলরাম অবতারে তার লীলা সঙ্গী হন।
আজ এই মহান ভক্ত প্রসঙ্গে আলোচনা করবো।
কশ্যপ মুনির ঔরসে কদ্রুর গর্ভে বিষ্ণু ভক্ত শেষ নাগ জন্মগ্রহণ করেন। তার সহস্র ফনার ছায়ার বিশ্রাম নেন শ্রী বিষ্ণু। তার কুন্ডলীকৃত দেহই শ্রী বিষ্ণুর অনন্ত সজ্জা। পুরান মতে নাগেদের মধ্যে শেষ নাগই শ্রেষ্ঠ।
সৃষ্টির ধ্বংস এবং পুনরায় সৃষ্টির সূচনায় শেষ নাগের বিশেষ ভূমিকার কথা একাধিক
পুরানে উল্লেখিত আছে। পুরান মতে শেষ নাগের মস্তকে পৃথিবী অধিষ্ঠান করছে। তার ক্রোধে পৃথিবী তে ভূমিকম্প হয় আবার প্রতি কল্পর শেষে শেষ নাগের মুখ থেকে অগ্নি নির্গত হয় এবং পৃথিবী ধ্বংশ হয়।এসবই হয় শ্রী বিষ্ণুর ইচ্ছেতে।ভগবান তার প্রিয় ভক্তের মাধ্যমে তার সৃষ্টি কার্য সম্পন্ন করেন।
রানী যশমতিকে স্বয়ং বিষ্ণু আশীর্বাদ দিয়েছিলেন যে আমি যখন কৃষ্ণ রূপে পৃথিবীতে আসবো তখন বলরাম রূপে শেষ নাগ আমার লীলা সঙ্গী হবেন এবং সেই সময়ে শেষ নাগের সঙ্গে তোমার বিবাহ হবে।দ্বাপর যুগে রানী রেবতী রূপে যশমতির জন্ম হয় এবং বলরাম রুপী শেষ নাগের সঙ্গে তার বিবাহ হয়।
আবার অনেকে মনে করেন ত্রেতা যুগে বিষ্ণু যখন রাম অবতার নেন তখন শেষ নাগ লক্ষণ রূপে তার তার সাথে ছিলেন এবং লক্ষণের ধর্মপত্নী আর কেউ নন তিনি স্বয়ং রানী যশমতি।
শিবের যেমন নন্দী। রামের যেমন বজরংবলী বিষ্ণুর তেমনই শেষ নাগ। ভক্ত এবং ভগবানের এই যুগলবন্দি সমগ্র সৃষ্টিকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
আবার পরের পর্বে এমনই এক ভক্ত এবং ভগবানের লীলা নিয়ে আধ্যাত্মিক আলোচনা করবো। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।