ভক্তের ভগবান – শিবভক্ত বানাসুর
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
শাস্ত্রে আছে শিব অতি অল্পে তুষ্ট হন এবং তার প্রকৃত ভক্তদের তিনি অপার ঐশর্য প্রদান করেন। দেবাদিদেব শুধু দেবতাদের আরাধ্যা দেবতা নন বহু অসুর, দৈত্য বা রাক্ষস ও তার আরাধনা করে তার কাছে বর প্রার্থনা করেছেন এবং তার অশেষ কৃপা লাভ করে ধন্য হয়েছেন।এদের মধ্যে অনেকই শিবের কাছে বর লাভ করে স্বয়ং শিব কেই বিপদে ফেলেছেন। তাদের কথা পরে বলবো আজ আপনাদের শিব ভক্ত বানাসুরের কথা জানাবো।
প্রাচীনকালে বাণ নামে এক শিব ভক্ত অসুর প্রতিদিন একটি করে শিব শিবলিঙ্গ নির্মাণ করে পূজা করতেন এবং মনে মনে তার আরাধ্য শিবের দর্শন কামনা প্রার্থনা করতেন।এইভাবে দীর্ঘদিন শিবপূজার ফলে শিব তাকে দর্শন দিয়ে একটি বর দিতে চান। ভক্ত বাণ বলেন, প্রতিদিন তাকে শিবলিঙ্গ নির্মাণ করতে বেশ কষ্ট পেতে হয়। তাই বর হিসেবে তিনি উত্তম লক্ষণযুক্ত চোদ্দ কোটি শিবলিঙ্গ চান। শিব ভক্তের মনোস্কামনা পূর্ণ করেন এবং চোদ্দো কোটি শিবলিঙ্গ নির্মাণ করে
বাণকে দেন।
এতো গুলি শিবলিঙ্গ পেয়ে বানাসুর ঠিক করেন তিনি সারা ভারতবর্ষে এই শিব লিঙ্গগুলি স্থাপন করবেন যাতে সর্বত্র শিব ভক্তরা এই সুন্দর এবং শয়ম্ভু শিব লিঙ্গ দর্শন করতে বা সংগ্রহ করতে পারেন।
পরিকল্পনা করে বানাসুর শ্রীশৈলে তিনকোটি, নেপালে এককোটি, কন্যতীর্থে এককোটি,কন্যাশ্রমে এককোটি,মহেন্দ্র পর্বতক্ষেত্রে এককোটি, মহেশ্বরক্ষেত্রে এককোটি, সৌরাষ্ট্রে এক কোটি উজ্জয়িনীতে এক কোটি ওমকার তীর্থে এককোটি,কাশীতে এককোটি,রামেশ্বরে এককোটি শিব লিঙ্গ নিঃক্ষেপ করেন এবং এই ভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে যায় বানাসুরের বানলিঙ্গ।
তবে নর্মদা নদী তীরে সর্বাধিক বানলিঙ্গ দেখতে পাওয়া যায়। এই প্রাকৃতিক শয়ম্ভু শিব লিঙ্গ দর্শন পাওয়া বা সংগ্রহ করে গৃহ মন্দিরে স্থাপন করা অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।একজন প্রকৃত ভক্ত রূপে বানাসুর তার আরাধ্য মহাদেবের মহিমা এই সারা বিশ্বে প্রচার করেছিলেন।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে।থাকবে আরেক
ভক্ত এবং আরাধ্য দেবতার লীলা কথা।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।