ভক্তের ভগবান – মহাপ্রভু এবং জগন্নাথদেব

144

ভক্তের ভগবান – মহাপ্রভু এবং জগন্নাথদেব

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

ভক্তি আন্দোলোনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন শ্রী চৈতণ্যদেব।১৪৮৬ সালের দোল পূর্ণিমায় বাংলার শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চার তৎকালীন পীঠস্থান নবদ্বীপে জন্মে ছিলেন গৌরাঙ্গ যিনি কৃষ্ণ সাধনায় নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে বিলিয়ে দিয়ে হয়ে উঠলেন মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য মহা প্রভুর জীবনের মোড় ঘুরে গিয়েছিলো পুরীতে গিয়ে। প্রভু জগন্নাথের মধ্যে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন পরম ব্রহ্মকে। সেই পরম ব্রহ্মতেই বিলীন হয়ে গিয়েছিলেন তিনি এমনটা জনশ্রুতি আছে।আজ এই ভক্ত এবং তার সাথে তার আরাধ্য জগন্নাথ দেবের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করবো।

শ্রী চৈতণ্যদেব ভক্ত না স্বয়ং ভগবান এনিয়ে সংশয় আছে। গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজ বা ইস্কন তাকে অবতার হিসেবেই দেখে। তবে তিনি নিজে নিজেকে সাধারণ কৃষ্ণ ভক্ত বলে দাবী করতেন।

সন্ন্যাসী রূপে জীবনের শেষ চব্বিশ বছর তিনি অতিবাহিত করেন জগন্নাথধাম পুরীতে। ওড়িশার সূর্যবংশীয় হিন্দু সম্রাট গজপতি মহারাজা প্রতাপরুদ্র দেব চৈতন্য মহাপ্রভুকে কৃষ্ণের সাক্ষাৎ অবতার মনে করতেন।

একবার পুরীর সর্বভৌম পন্ডিত মহাপ্রভুর মাহাত্ম কে চ্যালেঞ্জ করে ছিলেন। মহাপ্রভু তার গৃহে অতিথি হয়ে এসেছিলেন এবং এক রাতে তিনি সার্বভৌম পন্ডিতকে শ্রী কৃষ্ণ রূপে দর্শন দিয়ে ছিলেন বলে শোনা যায়।

কিংবদন্তী আছে যে একবার রথের দিন রাজ কর্ম চারী দের তথা কথিত নিম্ন বর্ণের ভক্তদের সাথে দুর্ব্যবহার দেখে ক্ষুব্ধ জগন্নাথ দেব রথের গতি স্তব্ধ করে দেন তারপর রাজার দুর্গতি দেখে এগিয়ে আসেন মহাপ্রভু তার কথা মতো রথের দড়ি ধরার জন্য সব শ্রেণীর মানুষ এগিয়ে এলে রথের চাকা আবার গড়াতে শুরু করে।

শ্রী চৈতণ্য দেবের অন্তর্ধান ও রহস্যময় এবং জগন্নাথের সথে সম্পর্ক যুক্ত।চৈতণ্য মঙ্গল কাব্যে উল্লেখ আছে আষাঢ় মাসে, সপ্তমীতে, সপ্তমী তিথিতে, বিকেলে গুঞ্জাবাড়িতে শ্রীমান মহাপ্রভু শ্রী জগন্নাথের গর্ভগৃহে প্রবেশ করেন এবং তাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে
অদৃশ্য হয়ে যান। এনিয়ে অবশ্য দ্বিমত বা কিছু বিতর্ক আছে।তবে কৃষ্ণ বা জগন্নাথ ভক্ত রূপে শ্রী চৈতণ্যদেব যে উচ্চতায় পৌঁছে ছিলেন তাতে ভক্ত এবং ভগবানের এমন মিলন অস্বাভাবিক কিছু নয় বলেও অনেকে মনে করেন।

আবার এমনই এক মহান ভক্ত এবং ভগবানের লীলা নিয়ে ফিরে আসবো পরের পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।