ভক্তের ভগবান – শিব ভক্ত রাবন
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
দশানন রাবন যদিও তামসিক প্রবৃত্তির ছিলেন তবুও তার মতো শাস্ত্রজ্ঞ এবং শিব ভক্ত খুব কমই আছে। আজকের পর্বে রাবনের শিব ভক্তি নিয়ে আলোচনা করবো।
রাবন নিয়মিত নিজের আরাধ্য মহাদেবের ধ্যান করতেন এবং তার পুজো করতেন এবং প্রায়ই কৈলাসে আসতেন শিবের দর্শন করতে।
একবার রাবন শিবকে স্থায়ী ভাবে লঙ্কায় নিয়ে যেতে কঠোর তপস্যা করেন।তপস্যয় সন্তুষ্ট হয়ে চন্দ্রহাস নামে একটি বিরাট শক্তিশালী অস্ত্রও রাবণকে উপহার হিসেবে প্রদান করেন, কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন রাবন, শেষমেষ শিব আত্মলিঙ্গ অর্পণ করে লঙ্কার প্রতিষ্ঠা করতে বলেন তাকে।শর্ত ছিলো কৈলাস থেকে লঙ্কার পথে যাওয়ার সময় কোথাও যদি রাবণ শিবলিঙ্গ কে কোন জায়গায় রেখে দেন, তাহলে তিনি সেখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাবেন। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে লঙ্কায় যাওয়ার পথে ক্লান্ত এবং তৃষ্ণার্থ রাবন এই স্থানে শিবলিঙ্গ কিছুক্ষনের জন্য নামিয়ে রাখেন আর সেখানেই শিবলিটি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল। সেই শিব লিঙ্গই বৈদ্য নাথ রূপের এই শক্তি পীঠের ভৈরব রূপে বিরাজ করছে।
একবার রাবন স্বয়ং শিব এবং পার্বতীকে প্রণাম করতে গিয়ে কৈলাশ পর্বত তুলে নিজের
শক্তি প্রদর্শন করতে গিয়ে ছিলেন। দেবাদিদেব নিজের একটি আঙুলের জোরে কৈলাশ পর্বতকে নিচে নামিয়ে এনে রাবনের দর্প চূর্ণ করেছিলেন। নিজের আরাধ্যা শিবের কাছে রাবন ক্ষমা চেয়ে ছিলেন এবং শিব কে সন্তুষ্ট করতে শিব স্তোত্র রচনা করে পাঠ করে শুনিয়ে ছিলেন। সেই শিব স্তোত্র আজও শিব পুজোয় ব্যবহার হয়।
শিবভক্ত রাবন শ্রী রামের হাতে প্রাণ ত্যাগ করে ছিলেন। এখনেও শিবের কৃপা লুকিয়ে আছে কারন ভগবানের অবতার শ্রী রাম কতৃক বধ হওয়া রাবনের পরম সৌভাগ্য। জন্ম মৃত্যু আবর্ত থেকে চীরতরে মুক্তি লাভ করে দুষ্ট রাবন ভগবত
চরণ লাভ করে ছিলেন।
ভক্ত এবং ভগবান নিয়ে আবার ফিরে আসবো পরবর্তী পর্বে থাকবে আরেক ভক্তের কথা এবং ভগবানের লীলা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।