কালী কথা – ভৈরবেশ্বরী কালী

46

কালী কথা – ভৈরবেশ্বরী কালী

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আজ কালী কথায় আপনাদের বর্ধমানের এক প্রসিদ্ধ কালী ক্ষেত্রর কথা জানাবো যা প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন।আজকের পর্বে দেবী ভৈরবেশ্বরী।

বর্ধমান রাজ পরিবারের এক পূর্বপুরুষ ভৈরবচাঁদ ছিলেন নিঃসন্তান। মা কালীর প্রতি যেমন তাঁর অগাধ ভক্তি ছিল। তিনি নিয়মিত মা কালীর আরাধনা করতেন।তিনি ছিলেন নিঃসন্তান সন্তান কামনায় প্রতিদিন মায়ের কাছে প্রার্থনা জানাতেন। তাঁর কাতর প্রার্থনায় মা কালী একদিন রাতে ভৈরবচাঁদ কাপুরকে স্বপ্ন দেন এবং দেবী বলেন যে “তোর সন্তানের জন্য দুঃখ কিসের। আমিই তোর সন্তান হয়ে তোর মেয়ে রূপে তোর কাছে
থাকব কথা দিচ্ছি”।

তারপরই এক মাঘ মাসের রটন্তী চতুদ্দশীর দিন নিমকাঠের কালী মূর্ত্তি তৈরী করে মন্দির নির্মাণ করে মাকে প্রতিষ্ঠা করেন ভৈরবচাঁদ। সেই থেকেই মায়ের পুজোর শুরু।খুব সম্ভবত ভৈরবের
নাম থেকেই দেবীর নাম ভৈরবেশ্বরী হয়।
ভৈরবেশ্বরী মন্দির দক্ষিণমুখী।এখানকার বিশেষত্ব মন্দিরে নিম কাঠের তৈরী প্রাচীন কালী মূৰ্ত্তি।

বিশেষজ্ঞদের মতে এই ধরনের নিম কাঠে
দিয়ে তৈরী কালী মূর্ত্তি নাকি একমাত্র পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরেই আছে। অনেকের মতে এই কালী মূর্তি ভারতবর্ষের মধ্যে দ্বিতীয়
নিম কাঠের কালী মূৰ্ত্তি যা অত্যান্ত দুর্লভ।

এছাড়াও রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ, গৌর নিতাই মূর্ত্তি, নারায়ণ শিলা এবং আরো, অনেক বিগ্রহের নিত্য পুজো এই মন্দিরে হয়। বাৎসরিক কালী পূজায় এবং প্রতিষ্ঠা দিবসে অর্থাৎ মাঘ মাসের রটন্তী চতুর্দশীতে পশু বলী সহ তন্ত্র মতে মহা সমারোহে পুজো অনুষ্ঠিত হয় এবং সেই উপলক্ষে
বহু ভক্তের সমাগম হয়।

ফিরে আসবো কালী কথা নিয়ে আগামী পর্বে। থাকবে অন্যএক কালী মন্দিরের ইতিহাস এবং নানা অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।