গুরু কথা – শ্রী বিনোদ বিহারী দাস

32

গুরু কথা – শ্রী বিনোদ বিহারী দাস

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আজ গুরু কথায় বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রসিদ্ধ এবং বৈষ্ণব ধর্মের একজন প্রবাদ প্রতিম ব্যাক্তিত্ব বিনোদ বিহারী দাসের কথা লিখবো।

বিনোদ বিহারী বাবার পূর্বের নাম ছিল বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ ।​​​ তিনি 1947 সালে এই বাংলার এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। সোনা যায় তার জন্মের পর এক সাধু এসে বলেছিলেন এই পুত্র সন্তান একদিন বিরাট মাপের সাধু হবে।

খুব কম বয়সে বিনোদ বাবা তার পিতা মাতাকে হারান এবং অনেক লড়াই করে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখেন।পড়াশোনার পাশাপাশি বাবা সঙ্গীতেও ছিলেন পারদর্শী। তিনি বিখ্যাত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী আল্লাহ রাখা খানের কাছে সংগীত শিখেছেন। ভালো সেতার এবং হারমোনিয়াম বাজাতে পারেন।

তখন তার বয়স সাতাশ । বারাসাতে তখন তিনি একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। নিরন্ত ভোগ বিলাসে ডুবে আছেন তিনি। আর পাঁচটা সংসারী মানুষের মতোই জীবন যাপন সেই সময় তার বাড়িওয়ালি তাকে কথামৃত পড়তে দেন। যে রাতে তিনি বইটি পড়া শেষ করেন সেই রাতেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন এই সংসার তার জন্য নয়। তাকে পরমাত্মার সন্ধানে বেরোতে হবে। ঘটে যায় বিরাট পরিবর্তন।সংসারের প্রতি বৈরাগ্য আসে। শুরু হয় সন্যাসীর জিবনের জন্য প্রস্তুতি।

পরবর্তীতে আরো অনেক শাস্ত্র পাঠ করেন। সাধু সন্ন্যাসীদের সাথে তীর্থে তীর্থে ঘোরেন এবং তারপর তিনি কিছুদিন হিমালয়ে ও কাটান। এতো কিছু করেও মনের মতো গুরু বা সঠিক আধ্যাত্মিক মার্গ পাচ্ছিলেন না। তারপর হরে কৃষ্ণ মহা মন্ত্রকে তিনি আঁকড়ে ধরেন। মহা মন্ত্র জপ করতে করতে তিনি খুঁজে পান তার সব প্রশ্নের উত্তর।ধীরে ধীরে ভগবত প্রেমে নিজেকে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে দেন এবং সম্পূর্ণ সমর্পন করেন রাধা কৃষ্ণের চরণে।

পরবর্তীতে একদিন স্বপ্নে গিরিরাজ গোবর্ধন দর্শন করেন এবং পরে বৃন্দাবনে যান সেখানে তিনি মহান বৈষ্ণব সাধক তিন কড়ি গোস্বামীর সংস্পর্শে আসেন এবং তার কাছে দীক্ষা নিয়ে পুরোপুরি সাধন ভজনে মননিবেশ করেন।

অনেকে বলেন তিনি সাক্ষাৎ রাধাকৃষ্ণ দর্শন করেছেন এবিং নিত্য তাদের সানিধ্য লাভ করে থাকেন। বিনোদ বাবা অবশ্য নিজে প্রচার থেকে দূরে নিজের সাধন ভজন নিয়ে থাকতেই ভালো বাসেন। তবে একথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় তার মতো উচ্চ স্তরে পৌঁছাতে খুব কম সাধুই পেরেছেন। আজ তার সারা দেশে অগণিত ভক্ত এবং শিষ্য।

গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষে চলতে থাকবে গুরু কথা। আবার এক গুরুর কথা নিয়ে আগামী পর্বে
ফিরে আসবো।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।