অম্বুবাচির শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
সামনেই অম্বুবাচি। ঋতুমতি হবেন ধরিত্রী। মাতৃ শক্তির এবং একই সাথে সৃষ্টি শক্তির প্রতীক মা কামাখ্যার মন্দিরে বসবে অম্বুবাচি মেলা। এই কটাদিন এই অম্বুবাচি নিয়ে নানা আঙ্গিক থেকে নানা দৃষ্টি কোন থেকে আলোচনা করবো। এই অম্বুবাচির শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা জানবো কেনই বা এই রীতি এতো তাৎপর্যপূর্ণ।
বিভিন্ন শাস্ত্রে আলাদা আলাদা ভাবে অম্বুবাচিকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যদিও আসল কথা একই।
সংস্কৃত শব্দ “অম্ব ” মানে জল আর “বাচি” মানে আরম্ভ বা সূচনা৷
প্রাকৃতিক ভাবে প্রচন্ড গরমের পর আষাঢ়ের এই সময় বর্ষার জলে ভিজে পৃথিবী হয় সিক্ত ও বীজ ধারনের উপযোগী ৷এই সময় মনে করা হয় মা বসুমতী ঋতুমতী হয়েছেন ৷ তার জীবন চক্রের এই বিশেষ সময় কালকে অম্বুবাচি হিসেবে পালন করা হয়।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে রাশি চক্রের ২৭টি নক্ষত্রের মধ্যে সূর্য যখন আদ্রা নক্ষত্রে প্রবেশ করে সেই
তিন দিন কুড়ি দন্ড সময়টাই “অম্বুবাচি ” ৷
রজঃস্বলা নারী যেমন এই সময় অনেক কাজ করেন না তেমনই প্রকৃতির ক্ষেত্রে এই সময়ে বিশেষ কিছু রীতি নীতি পালন করা হয়।
এই দিনগুলিতে চাষিরা কৃষিকাজ বন্ধ রাখেন ৷ সন্ন্যাসী , যোগী , বিধবা মহিলারা এই তিন দিন রান্না করা ও আমিষ খাবার খান না।
শাস্ত্রে আছে –
“ত্বমেব প্রকৃতিদেবী ত্বমেব পৃথিবী জলম্ ৷
ত্বমেব জগতাং মাতা ত্বমেব চ জগন্ময়ী ৷’’
অর্থাৎ পৃথিবী হলেন ধরিত্রী মাতা।বরাহ অবতারে সলীল সমাধি থেকে মাতা ধরিত্রীকে উদ্ধার করেছিলেন বিষ্ণু।
সনাতন ধর্ম এবং সংস্কৃতিতে নারী ও ধরিত্রী এই দুই উর্বরতা এবং সৃষ্টি শক্তির আধার তাই মাতৃ শক্তির এই স্বাভাবিক পর্যায়টি অত্যন্ত পবিত্র সময় রূপে দেখা হয় এবং অম্বুবাচির নিবৃত্তির সময়টি
দেশের নানা প্রান্তে উৎসব রূপে পালিত হয় ।
সেই প্রসঙ্গে আরো বিস্তারিত আলোচনা করবো
ধারাবাহিক ভাবে।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে। শাস্ত্র এবং তার ব্যাখ্যা নিয়ে। বাকি আছে অনেক তথ্য অনেক পৌরাণিক ব্যাখ্যা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।