সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের ইতিহাস
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজ কালী কথায় যে কালী মন্দির নিয়ে লিখবো সেই মন্দিরে এসে একবার শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছিলেন, ”ওরে এই মা সকলের মনোবাঞ্ছা পূর্ণ করেন। তোদের যা যা কামনা তাই তিনি পূর্ণ করতে পারেন ” এই মন্দিরটি হচ্ছে কলকাতার প্রাচীন সিদ্বেশ্বরী কালী মন্দির।
সে আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগের কথা তপস্বী কালীবর নামের এক মাতৃ সাধক হিমালয়ের এক গুহায় উপাসনা করতেন। একদিন স্বপ্নাদেশ পান তিনি। দেবী কালী তাঁকে বলেন, গঙ্গার তীরের এক জঙ্গলে পড়ে রয়েছেন তিনি। তাঁকে সেখানেই পুজোর আদেশ দেন কালী।সেই স্বপ্নাদেশ পাথেয় পেয়ে কালীবর চলে আসেন বাগবাজারের গঙ্গাপাড়ে।তখন এই অঞ্চলে ঘন জঙ্গল, বন্য জীব আর ডাকাতেরা এলাকার দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
সেখানেই এক হোগলা বনের মধ্যে তিনি শুরু করেন দেবীর উপাসনা। ভক্তের পুজোয় তুষ্ট হন দেবী। তাঁর নির্দেশেই ওই স্থানেরই বেতবনে বসে কালীর মূর্তি। সেই দেবীর নাম হয় সিদ্ধেশ্বরী কালী।
সাধকের নাম অনুসারে এই কালীকে ‘কালীবরের কালী’ হিসাবেও প্রসিদ্ধ।আবার এক সময়ে
ডাকাতরা পুজো করতো বলে ডাকাত
কালী বলেও পরিচিতি আছে।
বর্তমানে উত্তর কলকাতার কুমোরটুলির কাছে রবীন্দ্র সরণিতে রয়েছে সিদ্ধেশ্বরী কালী বাড়ি
আবার ফিরে যাই সেই সুদূর অতীতে শোনা যায় এই মূর্তি স্থাপনের পরে কিছুদিন কালীবরের হাতে দেবী পুজো পেলেও পরবর্তীতে দেবীর পুজোর ভার বর্তায় এক সন্ন্যাসী কাপালিকের উপর। তিনিই গোলপাতার ছাউনির মন্দিরে শুরু করেন দেবীর আরাধনা। সেই সময়েই শুরু হয় বলী প্রথা। এমনকি সেকালে নর বলীও হতো বলে কিংবদন্তী আছে।
শোনা যায় একদিন গঙ্গায় ভেসে আসা দুই বালককে বলী দেবে ঠিক করে ডাকাতদল।
সেই বালকদের বাঁচান মন্দিরের পূজারী সেই কাপালিক। তারপর থেকে পুজোর রীতি নীতিতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়। বন্ধ হয় বলী প্রথা। সেই বালক দুটির পরিবারকে পুজোর কিছু
দায়িত্বও দেয়া হয়।আজও চলছে এই সব রীতি নীতি।
প্রায় প্রতি অমাবস্যা তিথিতেই বিশেষ পুজো হয় তবে দীপান্বিতা অমাবস্যায় মহা সমারোহে পুজো
অনুষ্ঠিত হয়। দেবীর পরনে থাকে বেনারসী আর দেবীর হাতে থাকে খরগ। পুজো হয় তন্ত্র মতে।
আবার ফিরে আসবো এমন একটি
ঐতিহাসিক এবং প্রাচীন কালী মন্দিরের ইতিহাস
নিয়ে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।