বীরভূমের উদয় পুরের ডাকাত কালী পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বীরভূমের তারাপীঠ থেকে কিছুদূরে অবস্থিত উদয়পুর এবং দেখুরিয়ার কালীপুজো। এই পুজো পাঁচশো বছরেরও বেশি পুরনো। আজ কালী কথায় এই কালীপুজো নিয়ে লিখবো।
এই কালী পুজোর সাথে জড়িত আছে সাধক বামা ক্ষেপার নাম।শোনা যায় সাধক বামাক্ষ্যাপা নিজের বাড়ির কালীপুজো করার পর এই গ্রামে কালীপুজো করতে আসতেন
এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিল বর্ধমানের রাজারা। পরবর্তীtebবর্ধমানের রাজারা এই কালীপুজোর দায়িত্ব তুলে দেন স্থানীয় বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের হাতে। তখন থেকেই বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার এই পুজো চালিয়ে আসছেন। এখানে দেবী মূর্তির রূপ ভয়ঙ্কর এবং বিশাল আকারের হয়ে থাকে।উল্লেখ যোগ্য বিষয় হলো শুরুর দিন থেকে আজও এখানে মা কালীর মূর্তির গায়ে কোন কৃত্রিম রঙ ব্যবহার করা হয় না। প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ভেষজ উপাদান এবং আঠা দুধ ও সর্ষের তেল মিশিয়ে রং তৈরি করে সেই রঙে প্রলেপ দেওয়া হয় প্রতিমার গায়ে।
এখনকার আটলা গ্রাম এক সময় ছিল ঘন জঙ্গলে ঢাকা। সেই সময়ে গভীর রাতে এখানে ডাকাতরা এসে পুজো করে ডাকাতি করতে বার হত। এক সময় তারাপীঠে দ্বারকা নদীর ওপর দিয়ে বণিকেরা নৌকা করে বাণিজ্য করতে বার হতেন।তখনই ডাকাতেরা সেই বণিক দের উপর লুঠ পাট চালিয়ে। সেই ডাকাতির জিনিসপত্র মা কালীর পায়ে অর্পণ করত। তাই এই কালীপুজো ডাকাতকালী নামেও পরিচিত।
ভট্টাচার্য পরিবারের বর্তমান বংশধর পূজার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।তার সাথে যোগ দেন এই এলাকার জন সাধারণ। সব মিলিয়ে উদয় পুরের এই কালী পুজো বাংলার অন্যতম প্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ কালী পুজোর রূপ নিয়েছে।প্রতিটি বিশেষ তিথিতে ব্যাপক জন সমাগম হয় এই স্থানে।
কালী কথার পরবর্তী পর্বে আবার ফিরে আসবো।থাকবে এমনই এক ঐতিহাসিক এবং অলৌকিক কালী মন্দিরের কথা।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।