বাংলার ঐতিহাসিক পুজো – বর্ধমানের জোড়া দূর্গা পুজো

229

আজ আপনাদের এমন এক দূর্গা পুজোর কথা বলবো যেখানে একটি নয় একসাথে দুটি দূর্গার পুজো হয়|বর্ধমানের গলসির রায়চৌধুরী বাড়িতে বসে জোড়া দুর্গা পুজোর আসর|মনে করা হয় জোড়া দূর্গা পুজোর কিছু ইতিহাস রয়েছে তবে তা ওই প্রাচীন রায় চৌধুরী পরিবারের বর্তমান সদস্য দের অজানা। তবুও নিষ্ঠাভরে বংশপরম্পরায় চলে আসছে একই বাড়িতে দুই মন্দিরে দুই দুর্গার পুজো।আজও নিয়ম মেনে একই সময়ে পৃথক পণ্ডিত দিয়ে একই মন্ত্র উচ্চারণ করে পাশাপাশি পূজিত হন|প্রতিবছর পুজোর সময়ে দুটি দুর্গা মূর্তি একসঙ্গে সেজে ওঠে। সমস্ত সাজ সম্পন্ন হওয়ার পর এক অনবদ্য রূপ ধারন করে দুর্গা মন্দির ও দুর্গা প্রতিমা। যেখানে মন্দিরটি রয়েছে সেটি একটি মেঝের মধ্যে। এক ছাদের নীচে রয়েছে দুটি মন্দির যার মধ্যে কেবল রয়েছে একটি দেওয়াল।জোড়া দুর্গামন্দিরের জোড়া দুর্গা পুজো প্রায় ১৫০-৩০০ বছরের প্রাচীন বলে মনে করা হয়।তবে বর্তমান প্রজন্মের কেউও পুজো শুরুর সঠিক সময় জানেন না|রায়চৌধুরী বাড়ির মায়ের নির্মাণে রয়েছে বিশেষত্ব। দুর্গা প্রতিমা একচালার। একটি পুজো বাড়ির চার ভাইয়ের পরিবার করে আর আরেকটি পুজো ১৬ টি পরিবারের সদস্যরা ও গ্রামের সকলে মিলে পুজো করেন।দুটি পুজোই ষষ্ঠীর দিন থেকে পঞ্জিকা মেনে হয়। তবে বাড়িতে পুজোর আমেজ এসে যায় মহালয়ার দিন থেকেই। কলাবউ স্নান হয় পাশের থাকা পুকুরে। সেখান থেকেই শুরু হয় পুজোর নিয়মাবলী। কলাবউকে নিয়ে আসাকে রায়চৌধুরী পরিবারের সকলের ‘দোলা’ আনতে যাওয়া বলে থাকেন। পরিবারের দুই ছেলে সেটিকে বহন করে থাকেন এবং বাকি বয়স্করা বাকি কাজ করেন।জোড়া দূর্গা পুজোয় দেওয়া হয় ছাগলের বলি। শোনা যায় এই বলি প্রথা বন্ধ করার চেষ্টা হয়ে ছিলো ২০২০ সালে, কিন্তু বলি বন্ধ করার কথা ভাবতেই ঘটে যায় এক অবিশ্বাস্য ঘটনা।সেবার ছাগ বলির সময় খাঁড়া ঘুরে যায় এবং যেখানে একবরে বলি হয় সেখানে তিন বারের চেষ্টাতে বলি সম্পন্ন করতে হয়|সেই থেকে পুজোর প্রাচীন রীতি নীতি তে আর কোনো পরিবর্তন আনার কথা ভাবা হয়নি|বাংলার প্রাচীন ঐতিহাসিক পুজোর সংখ্যা অনেক তাই দূর্গা পুজো উপলক্ষে চলতে থাকবে এই বিশেষ পর্ব গুলি ধারাবাহিক ভাবে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|