দেবী দুর্গার অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আগেই বলেছি আজকের পর্বে দেবীর বাহন নিয়ে বলবো তবে শুরুতে দেবীর গহনা ও সাজসজ্জা নিয়ে কিছু তথ্য জানিয়ে রাখি|দেবতাদের দেয়া অস্ত্রে সজ্জিত দেবীকে অলঙ্কারে ভূষিত করেন কুবের, সূর্যদেব দেবীকে কাঞ্চন বর্ণের সৌন্দর্যময় দ্যুতি প্রদান করেন। বিশ্বকর্মা প্রদান করেন দুর্ভেদ্য কবচ-কুণ্ডল ও অক্ষয় বস্ত্র। এতে দেবীর সুরক্ষিত হয়ে উঠেন। আর হিমালয় তাকে দেন বাহনদেব সিংহ।সবকিছুর সম্মিলনে দেবী হয়ে ওঠেন অনন্ত শক্তি ও অপার রূপ এবং ঐশর্যর প্রতীক।প্রচলিত মতে সিংহ হলো দুর্গার বাহন, এজন্য যারা দুর্গার মূর্তি বানায়, তারা সিংহের পিঠের উপরই দুর্গাকে স্থাপন করে দেয়, এতে খুব সহজেই বোঝা যায় বা মনে হয় যে, সিংহই দুর্গাকে বহন করে নিয়ে এসেছে; কিন্তু বাস্তব ব্যাপার তা নয় সিংহ হিংস্র, আক্রমণাত্মক। সিংহ শৌর্যের প্রতীক। এই সব গুণ দুর্গার মধ্যেও দেখা যায়। আবার সিংহের গর্জনকে দুর্গার ধ্বনি মনে করা হয়, যার সামনে সংসারের সমস্ত আওয়াজ দুর্বল হয়ে যায়|অর্থাৎ সিংহ মা দুর্গার তেজ ও পরাক্রমের প্রতীক|আবার পদ্মপুরানে আরও বলা আছে যে, দুর্গার ক্রোধ থেকে সিংহের জন্ম|কালিকাপুরাণ মতে শ্রীহরি দেবীকে বহন করছেন। এই হরি শব্দের এক অর্থ সিংহ।আবার শ্রীশ্রীচণ্ডীতে উল্লেখ আছে গিরিরাজ হিমালয় দেবীকে সিংহ দান করেন।শিবপুরাণ বলে, ব্রহ্মা দুর্গাকে বাহনরূপে সিংহ দান করেছেন। উদ্দেশ্য ছিল শুম্ভ ও নিশুম্ভ বধের সুবিধাঅসীম শক্তিশালী সিংহের কাছে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে আত্মসর্মপণের। কারণ সে এতো শক্তিশালী হয়েও দেবীর পদতলে নিত্য শরনাগত|যেহেতু বৈষ্ণব ধর্ম হিংস্রতাক সমর্থন করেনা এবং সম্পূর্ণ ভাবে সাত্ত্বিক জীবন ধরনে বিশ্বাসী তাই বৈষ্ণব মতে যেখানে যেখানে দেবীর পুজো হয় সেখানে সিংহকে ঘোড়ার অবয়বে প্রতিষ্ঠা করা হয়|বাংলার বহু প্রাচীন বনেদি বা জমিদার বাড়ির পুজোতে দেবীর বাহন হিসেবে এই রূপ সিংহ মূর্তি দেখা যায়|আগামী পর্বগুলিতে দেবী দূর্গা সংক্রান্ত আরো অনেক তথ্য ও পৌরাণিক ব্যাখ্যা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকবে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|