দশ মহাবিদ্যা – দেবী ছিন্নমস্তা

457

জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে দশ মহাবিদ্যার একেকটি রূপ একেকটি গ্রহর ইষ্ঠ দেবী যা প্রথম দিন আপনাদের বলেছি|রাহু একটি পাপ গ্রহ হিসেবে বিবেচিত হয় আমাদের জ্যোতিষ শাস্ত্রে এবং এই গ্রহের ইষ্ঠ দেবী ছিন্ন মস্তা|আজ আলোচনা করবো দেবীর এই বিশেষ রূপ নিয়ে|দশমহাবিদ্যার তৃতীয় রূপ হল ছিন্নমস্তা।একদিন পার্বতী ডাকিনী ও বর্ণিনীকে নিয়ে মন্দাকিনী নদীতে স্নান করতে যান। মন্দাকিনীতে জলকেলী করে উঠে দুই সহচরী আর্তনাদ করে ওঠেন, ‘আমি ক্ষুধার্ত, আমাদের খাদ্য দাও’। কিন্তু ডাকিনী ও বর্ণিনী রক্ত ও মাংস ছাড়া অন্য খাদ্য খায় না। তখন দেবী অট্টহাস্য করে নিজের নখাগ্র দিয়ে নিজের কণ্ঠচ্ছেদ করলেন। ছিন্নমস্তকটি তখন তাঁর বাম হাতে এসে পড়লো। মুক্তকণ্ঠ থেকে তিনটি ধারায় ফিনকী দিয়ে রক্তস্রোত বের হতে লাগল। দেবীর দুই পাশে দাঁড়িয়ে দুই সহচারী সেই দুই রক্তধারা পান করতে লাগল। মধ্য ধারা দেবী সেই ছিন্ন মস্তক দ্বারা পান করতে লাগলেন। এই রূপ তিনি স্বামীকে ভয় দেখানোর জন্য এই বিভূতি দেখান।দেবীর এই তৃতীয় রূপই সব থেকে ভয়ঙ্কর। বাম হাতে ধরে আছেন নিজের মাথা এবং গলা থেকে নির্গত রক্তের স্রোত তিন ধারার মধ্য মাঝের ধারা সেই ছিন্ন মস্তকে পান করছেন। বামে মহচরী ডাকিনী ও ডানে সহচরী বর্ণিনী বাকি সেই দুই রক্তধারা পান করছেন। সবাই দিগম্বরী, মুণ্ডমালিনী ও মুক্তকেশী। ছিন্নমস্তা দেবী নানা ফুলে শোভিত। গলায় মুণ্ডমালা এবং নাগ উপবীত।দেবী ছিন্নমস্তা রতি ও কামদেবেরউপর দণ্ডায়মান।এবার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি|যে বেদ আমাদের আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যর ধারক ও বাহক সেই বেদেই রয়েছে ভারতীয় জ্যোতিষ শাস্ত্রের জন্ম রহস্য জ্যোতিষ ৬ টি বেদাঙ্গের অন্যতম|যে নয় টি গ্রহ নিয়ে আমাদের জ্যোতিষ শাস্ত্র আবর্তিত হয় তার প্রত্যেকটির একেকটা নিজস্ব ইষ্ঠ দেবী রয়েছে যা দশ মহাবিদ্যা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে উঠে আসছে আবার গ্রহের দেবতা বা অধিপতি রয়েছে|যেমন রবির সূর্য দেব, শনির শনিদেব ইত্যাদি ইত্যাদি আবার রাহু কেতুর মতো দানবও রয়েছে|নক্ষত্রদের ও নিজস্ব অধিপতি রয়েছে|আবার প্রতিটি গ্রহের রয়েছে নিজস্ব তত্ব এবং দিশা|আমরা যখন কোনো গ্রহের প্রতিকারের কথা বলি সে রত্ন বা রুদ্রাক্ষ ধারন হোক বা শাস্ত্র মতে পুজো ও হোম যজ্ঞর মাধ্যমে হোক ওই আধ্যাত্মিক বিষয়টাও তার সাথে যুক্ত থাকে|আপনাদের হৃদয়েস্বরী সর্ব মঙ্গলা মায়ের মন্দিরে আসন্ন কৌশিকী অমাবস্যা শাস্ত্র মতে পুজো ও হোম যজ্ঞ এবং গ্রহ দোষ খন্ডনের সব ব্যবস্থা থাকবে|যারা আগ্রহী তারা যোগাযোগ করতে পারেন|ফিরে আসবো দশ মহাবিদ্যা, তন্ত্র এবং কৌশিকী অমাবস্যা নিয়ে আরো অনেক আলোচনা নিয়ে|পড়তে থাকুন|ভালো থ্যাকুন|ধন্যবাদ|