বছরের এই সময়ে রথ যাত্রা উপলক্ষে শুধু জগন্নাথ নন দুই দাদা জগন্নাথ ও বলরামের সঙ্গে রথে চড়ে মাসির বাড়ি যান তাদের বোন সুভদ্রাও।কিন্তু আসলে কে এই সুভদ্রা ও কি তার আসল পরিচয় আজকের পর্বে সেই কথাই বলবো|সুভদ্রা মহাভারতের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র আবার সুভদ্রার উল্লেখ বারবার পুরাণেও পাওয়া যায়। বীরযোদ্ধা অভিমন্যুর মা তিনি। রথযাত্রার আগে মহাভারত অনুসারে কৃষ্ণ ও বলরামের ছোট বোন সুভদ্রাকে বিয়ে করেছিলেন তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন। সুভদ্রা ও অর্জুনের পুত্র অভিমন্যু চক্রব্যুহ ভেদ করে সপ্তরথীর সঙ্গে একা বীরের মতো যুদ্ধ করে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন। তবে শুধু কৃষ্ণ ও বলরামের বোন, অর্জুনের স্ত্রী এবং অভিমন্যুর মা এই পরিচয়ই সুভদ্রার জন্য যথেষ্ট নয় তার আরো একটি পরিচয় আছে|সুভদ্রা আসলে সেই যোগমায়া, যাঁকে তাঁর জন্মের রাতেই মায়ের কোল থেকে সরিয়ে এনে তুলে দেওয়া হয়েছিল কংসের হাতে। সদ্যোজাত কৃষ্ণকে রক্ষা করতে তাকে ঘাতকের হাতে তুলে দিয়েছিলেন কৃষ্ণর পিতা বসুদেব|শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে একই সময়ে নন্দ ও যশোদার ঘরে জন্মেছিলেন যোগমায়া|তিনি স্বয়ং দেবী পার্বতী। প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টির সেই রাতে কৃষ্ণকে কংসের কারাগার থেকে সরিয়ে ফেলতে গোকূলে যান বসুদেব। সেখানে অচেতন যশোদার পাশ থেকে সদ্যজাত যোগমায়াকে সরিয়ে সেখানে কৃষ্ণকে রেখে আসেন তিনি। যোগমায়াকে নিয়ে কংসের কারাগারে ফিরে এসে দেবকীর পাশে শুইয়ে দেন।পরের ঘটনা কম বেশি সবাই জানেন কংস এসে যোগমায়াকে নিধন করতে উদ্যত হলে তাঁর হাত ছাড়িয়ে আকাশে মিলিয়ে যান তিনি। যাওয়ার আগে কংসকে এই বলে সতর্ক করে দিয়ে যান, ‘তোমারে বধিবে যে, গোকূলে বাড়িছে সে।’পরবর্তীতে তাই হয়েছিলো কৃষ্ণের হাতে পরাজিত ও নিহত হন কংস|পার্বতীর অংশ যোগমায়াই পরে বসুদেব ও তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী রোহিনীর সন্তান হয়ে জন্ম নেন। তখন তাঁর নাম হয় সুভদ্রা, কৃষ্ণ ও বলরামের আদরের বোন। পুরীতে কৃষ্ণ জগন্নাথ রূপে পূজিত তাঁর সঙ্গে থাকেন দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রা|আগামী পর্বে আরো একটি রথ যাত্রা বিষয়ক পর্ব নিয়ে ফিরে আসবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|