নবরাত্রি – দেবী শৈলপুত্রী

82

নবরাত্রি – দেবী শৈলপুত্রী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

নবরাত্রি উপলক্ষে আজ

থেকে শুরু করছি দেবীর নয়টি রূপ নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা।আজ লিখবো

দেবীর প্রথম রূপ শৈল পুত্রী নিয়ে|

 

নবরাত্রি উৎসবের প্রথমদিনের পুজো হয় দেবী শৈলপুত্রীর।দেবী শৈলপুত্রীর আবির্ভাব হয়েছিলো একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে।প্রজাপতি দক্ষএকবার বিরাট যজ্ঞ করেন ।তার যজ্ঞে সতী কে নিমন্ত্রণ করা হয়নি । সতী পিতৃ গৃহে যাবার জন্য অস্থির হলেন কিন্তু ভগবান শঙ্কর সাবধান করলেন যে কোন কারনে তিনি উমার উপর রেগে আছেন । কিন্তু সতীর মন মানল না তখন মহাদেব অনুমতি দিলেন যাবার জন্য । কিন্তু পিতৃ গৃহে গিয়ে পৌঁছে দেখলেন কেউ তাকে সেরকম স্নেহ ভরে কাছে ডাকছে না । একমাত্র মা জড়িয়ে ধরলেন । স্বয়ং দক্ষ তাকে নানা খারাপ কথা বললেন । তখন রাগে দুঃখে যজ্ঞাগ্নির সাহায্যে নিজে কে ভস্মীভূত করলেন ।সতীর এই পরিনতির সংবাদ শুনে শিব ও তার অনুগামীরা প্রচন্ড ক্রোধে দক্ষের যজ্ঞ ধ্বংস করলেন এবং দক্ষকে উচিৎ শিক্ষা দিলেন।

 

কিন্তু শিব আর পার্বতী এক এবং অভিন্ন তাই শিবের সঙ্গে পুনরায় মিলিত হতে সতীর পুনর্জন্ম হলো শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা রুপে।শৈলরাজ হিমালয়ের কন্যা হবার জন্য দেবীর এক নাম হয় শৈলপুত্রী এবং এই জন্মেই তিনিই পার্বতী রূপে শিবের অর্ধাঙ্গিনী হলেন|

 

 

দেবী শৈলপুত্রী সম্পর্কে বর্ণনা আছে কালিকা পুরাণে।দেবী শৈলপুত্রী আসলে প্রকৃতির দেবী। শৈলপুত্রীর বাহন বৃষ । এঁনার দক্ষিণ হস্তে ত্রিশূল আর বাম হস্তে কমল আছে তাই দেবীর অপর নাম শুলধারিনি|আবার তাকে দেবী হৈমবতী

বলেও ডাকা হয়।

 

শাস্ত্র অনুযায়ী ব্রহ্মার শক্তির প্রতীক হলেন দেবী শৈলপুত্রী কারন একবার দেব ও অসুরের যুদ্ধে ব্রহ্মা দেবতাদের জয়ী করেছিলেন। কিন্তু ব্রহ্মার শক্তি ভুলে দেবতারা জয়ের গৌরব নিজেরাই নিতে উদ্যত হলেন। ব্রহ্মদেব তখন নিজে এলেন দেবতাদের দর্পচূর্ণ করতে। তিনি একখণ্ড তৃণ রাখলেন দেবতাদের সম্মুখে। কিন্তু দেবতারা আশ্চর্য হয়ে দেখলেন, অগ্নি সেই তৃণখণ্ডটি দহন করতে বা বায়ু তা একচুল পরিমাণ স্থানান্তরিত করতে অসমর্থ হলেন। তখন ইন্দ্র এলেন সেই অনন্ত শক্তির উৎসকে জানতে। সেই মুহূর্তে ব্রহ্মশক্তি শৈলপুত্রীর রূপ ধারন করে দেবরাজ ইন্দ্র কে দেখা দিলেন।এই রূপেরই পুজো হয়। নবরাত্রির সূচনা লগ্নে।

 

নব রাত্রি উপলক্ষে ধারাবাহিক ভাবে চলবে এই আলোচনা|আগামী পর্বে দেবীর পরবর্তী রূপ

নিয়ে লিখবো । পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।