কালী কথা – জহুরা কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বাংলার অন্যতম প্রাচীন কালী মন্দির জহুরা কালীর মন্দির মালদায় অবস্থিত এই কালী মন্দিরে অধিষ্টান করছেন মা জহুরা।আজকের কালী কথায় এই দেবীর মাহাত্মা বর্ণনা করবো।
মালদায় ইংরেজবাজার থানা এলাকায় একটি প্রাচীন আমবাগানের মধ্যে রয়েছে জহুরা কালী মন্দির।
শোনো যায় এক কালে এই অঞ্চলে ছিলো ঘন অরণ্য|ডাকাতরাই একপ্রকার শাসন করতো এই এলাকা এবং এই দেবী এক সময়ে ছিলেন ডাকাতদের আরাধ্যা। এখানে দেবী চণ্ডীর পুজো করে ডাকাতরা যেত ডাকাতি করতে। ডাকাতি করে প্রচুর ধনরত্ন আনত তারা, তারপর সেগুলোকে এখানেই মাটির তলায় রাখত। সেই ধনরত্নের ওপরই দেবীমূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয় যেহেতু ধনরত্নকে হিন্দিতে বলে ‘জওহর’। দেবীমূর্তির নিচে প্রচুর ধনরত্ন রাখা থাকত বলেই এখানে দেবী চণ্ডী ‘জহরা’ বা ‘জহুরা’ নামে বিখ্যাত|
আজও কিছু ইতিহাস বিদ মনে করেন এই দেবীর পুজোর সূচনা হয়েছিলো সেন বংশের রাজা বল্লাল সেনের আমলে আবার মন্দিরের গায়ে যে পাথরের ফলক আছে তা থেকে অনুমান করা যায়,আজ থেকে তিনশো বছর আগে উত্তরপ্রদেশের কোনো এক মাতৃ সাধক স্বপ্নাদেশ পেয়ে এখানে দেবী জহরা চণ্ডীর বেদি স্থাপন করেছিলেন|
কথিত আছে এক কালে এখানে দেবীর পূর্ণ অবয়ব মূর্তি ছিলো তবে বিদেশী শত্রুর আক্রমণের ভয়ে তা মাটির নিচে লুকিয়ে ফেলেন পুরোহিতরা|
বর্তমানে মন্দিরের অভ্যন্তরে লাল রঙের ঢিবির ওপর রয়েছে এক মুখোশ এবং ঢিবির দু’পাশে আরও দু’টি মুখোশ দেখা যায়। এছাড়া গর্ভগৃহে আছে শিব আর গণেশের মূর্তি|
দেবী জহুরা চন্ডিরই রূপ তিনি অত্যন্ত জাগ্রত ও প্রসিদ্ধ তার পুজো উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চল ছাড়াও বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ সমবেত হন এই মন্দির প্রাঙ্গনে|
এখানে বৈশাখ মাসের মঙ্গল ও শনিবার থাকে বিশেষ পুজোর আয়োজন|উল্লেখযোগ্য বিষয় অন্যান্য কালীমন্দিরের মতো এখানে রাত্রিবেলা কোনো পুজো এখানে হয় না পুজো হয় দিনে|
আজ লেখা এখনেই শেষ করলাম। শুধু আরো একবার মনে করিয়ে দিই।আগামী ২২ এ আগস্ট কৌশিকী অমাবস্যা। যারা তন্ত্র মতে গ্রহের প্রতিকার চান তাদের জন্য এটি শ্রেষ্ঠ সময়।
ফিরে আসবো কালী কথার পরবর্তী পর্ব নিয়ে। যথা সময়ে।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।