কালী কথা – বড় দেবীর পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজকের কালী কথায় কোচবিহারের বড়ো দেবীর পুজো নিয়ে লিখবো।যে পূজোর বয়স প্রায় পাঁচশো বছর।গোটা উত্তর বঙ্গে এই বড় দেবী অত্যান্ত জাগ্রত এবং জনপ্রিয়।
প্রথাগত প্রতিমার থেকে এই প্রতিমা সম্পূর্ণ আলাদা। এখানে দেবী রক্তবর্ণা এবং উগ্ররূপে তিনি বিরাজ করছেন । সঙ্গে থাকেন দুই সখী জয়া এবং বিজয়া। দেবীর বাহন বাঘ এবং সিংহ উভয়।
শতাধিক বছর আগে কোচবিহার রাজ বংশের অন্যতম রাজা মহারাজা নরনারায়ণ স্বপ্নে ওই এই দেবীকে দেখেছিলেন সেই রূপেই আজও এখানে পূজিত হন দেবী।
আজ থেকে পাঁচশো বছর আগে এই রাজ বংশের বিশ্ব সিংহ এবং তাঁর ভাই শীষ্য সিংহ খেলার ছলে দেবীর আরাধনা শুরু করেন। ময়নার ডালকেই দেবীরূপ দিয়ে পুজো করেন তাঁরা। পরবর্তীতে সেই কাঠ ‘বড় দেবী’র মন্দিরে এনে, তাকে কাঠামো হিসেবে ব্যবহার করে তার উপর শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ।
শোনা যায় একবার মহারাজা বিশ্ব সিংহ খেলার ছলে এক সাথীকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করেন। সঙ্গে সঙ্গে সেই বালকের মাথা আলাদা হয়ে যায় ধড় থেকে। সেই মাথা দেবীকে নিবেদন করেন বিশ্ব সিংহ। সেই থেকে শুরু হয় এক অদ্ভুত রীতির প্রচলন। আজও ‘বড় দেবী’র পুজোয় একফোঁটা হলেও প্রাণীর রক্তর প্রয়োজন হয় এবং আজও নাকি তাজা রক্ত সংগ্রহ করে দেবীকে উৎসর্গ করা হয়।
পুজো হয় তন্ত্র মতে এবং আজও পুজোতে পশুবলি হয়। বিসর্জনের সময় যমুনা দীঘিতে নিয়ে যাওয়া হয় মৃন্ময়ী প্রতিমা এবং দেবী মূর্তি খণ্ডিত করে বিসর্জন দেওয়া হয়।
ফল হারিণী অমাবস্যা উপলক্ষে বাংলার বহু এমন ঐতিহাসিক কালীপুজো এবং অলৌকিক ঘটনা নিয়ে আলোচনা করছি কালী কথায় ।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।