কালী কথা – বন কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বর্ধমানের অখ্যাত রাজকুসুম গ্রামে আজ থেকে আনুমানিক সাড়ে চারশো বছর আগে।বন কালীর পুজো শুরু হয়। প্রাচীন এই কালী পুজো নিয়ে আজকের কালী কথা।
ঠিক কবে কে এই পুজো শুরু করেন তা নিশ্চিত ভাবে বলা না গেলেও এটুকু জানা যায় যে
পুজোর পুরোহিত ছিলেন স্থানীয় ভট্টাচার্য্য পরিবারের এক সদস্য। দুর্গম এই অরণ্যে সেই সময় ছিলো বন্য পশু এবং ডাকাতের ভয়।পুজোর সময়ে পুরোহিতকে রীতিমত লাঠিয়াল সাথে করে জঙ্গলে আনা হত। পুজো অনুষ্ঠিত হতো দিনের বেলায়।
একবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য পুজোর স্থানে পৌঁছাতে নানা বাঁধার সৃষ্টি হয়।তারপর স্বপ্নাদেশ পান পুরোহিত । দেবী স্বপ্নে দেখা দিয়ে তাকে তার বাড়িতেই রেখে পুজো করতে বলেন। দেবী আরো বলেন জঙ্গলের মধ্যে একটি গাছের গায়ে দুটো চোখের আকৃতি দেখা যাবে সেই গাছেই তিনি বিরাজমান থাকবেন। সেই গাছের গোঁড়ায় মূর্তি ছাড়াই হবে পুজো।সেই নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়।
সেই থেকে ভট্টাচার্য বাড়িতে দেবী অধিষ্ঠান করছেন আবার একই সাথে জঙ্গলে এক গাছে দেবীর শক্তি উপস্থিত। সেখানেও ভক্তরা এসে পুজো দেন। জঙ্গল বা বনের মধ্যে দেবী বিরাজ করছেন তাই নাম হয় বন কালী
সাধারণত বাংলার সব কালী মন্দিরে দীপান্বিতা অমাবস্যা বা কালী পুজোর দিনেই বড়ো করে
কালী পুজোর আয়োজন হয় কিন্তু বন কালীর পুজো হয় কালী পুজোর পরদিন।এখানে নেই কোনো মূর্তি তার বদলে আছে গাছ এবং গাছে চোখের আকৃতিও দেখা যায়।পাশাপাশি ভট্টাচার্য বাড়তেও বন কালীর আরাধনা হয়।
আবার এমন এক প্রাচীন কালী পুজোর ইতিহাস এবং অলৌকিক ঘটনা নিয়ে ফিরে আসবো
কালীর কথার পরবর্তী পর্বে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।