শিব তীর্থ – রাঘবেশ্বর শিব মন্দিরের ইতিহাস
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে রয়েছে অসংখ্য শিব মন্দির।
যেগুলির সাথে জড়িত আছে ইতিহাস আছে নানা গল্প এবং কিংবদন্তী। শিব রাত্রির আগে এমনই কিছু শিব মন্দির নিয়ে আলোচনা করবো। আজকের পর্বে কৃষ্ণ নগরের রাঘবেশ্বর শিব মন্দির।
নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রপিতামহ ছিলেন রাজা রাঘব রায়। তার রাজত্বকালে তিনি
কৃষ্ণনগর থেকে শান্তিপুর পর্যন্ত একটি রাস্তা তৈরি করেন এবং জনসাধারণের জলকষ্ট নিবারণের এক বিশাল দিঘি খনন করেন।
দিঘি বা দীর্ঘিকা থেকে স্থানের নাম হয় দীর্ঘিকানগর। দিঘির পূর্ব দিকে রাজা রাঘব একটি সুন্দর অট্টালিকা এবং একটি সুন্দর শিব মন্দির নির্মাণ করেন। রাজা রাঘবের নামে শিব মন্দিরের নাম হয় রাগবেশ্বর শিব মন্দির।
এই শিব মন্দির এবং দীঘিকে কেন্দ্র করেই এই অঞ্চলে গড়ে ওঠে জনবসতি। সেকালে বিভিন্ন জাতের মানুষের জন্য একাধিক ঘাটও নির্মিত হয়ে ছিলো। এই মন্দির থেকে কিছু দূরেই ছিলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দিদির বাড়ি। শোনা যায় একাধিক বার কবি গুরু এখানে এসেছেন।
রাঘবেশ্বর শিব মন্দির নদিয়া জেলার টেরাকোটা মন্দিরগুলির মধ্যে অন্যতম। মন্দিরে ব্ল্যাক বেসল্টের তৈরী । মন্দিরটি একটি উঁচু ভিত্তি বেদির উপর স্থাপিত। বাংলা চারচালা রীতিতে তৈরী মন্দিরটিতে দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিম দিকে মোট তিনটি দরজা। দরজার দুপাশে দুটি করে ছোট ছোট থাম এবং একটি করে কারুকার্য করা খিলান। আজ অন্য ঐতিহাসিক নিদর্শন এবং মন্দির ও অট্টালিকা সবই ধ্বংস হয়েছে তবে রাঘবেশ্বর শিব আজও নিত্য পূজিত হন এবং জেলার অন্যতম প্রসিদ্ধ ও জাগ্রত শিব লিঙ্গ রূপে তার জনপ্রিয়তা আছে।
ফিরে আসবো আরো একটি শিব মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে আগামী পর্বে। চলতে থাকবে
ধারাবাহিক শিব তীর্থ। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।