কালী তীর্থ – মহা কালীর পুজো

115

কালী তীর্থ – মহা কালীর পুজো

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

বাংলা পুন্য ভূমিতে দেবীকালী বিভিন্ন রূপে বিরাজ করছেন বিভিন্ন স্থানে।কোথাও তিনি শ্মশান কালী আবার কোথাও তিনি ভবতারিণী আজ আপনাদের যে দেবীর কথা বলবো তিনি দেবী মহা কালী। জানবো এই ভিন্ন তবে শাস্ত্র সম্মত দেবী রূপের পুজোর ইতিহাস।

দেবীর এই রূপে পূজিতা হন মালদার ইংরেজ বাজার এলাকায়।তখন ১৯৩০ সাল, দেশে তখন শাসন করছে ইংরেজরা। মালদহে চরম অত্যাচার চালিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার।ব্রিটিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে মানুষজন বিদ্রোহ করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন নিজেদের মধ্যে শক্তি আর সাহস বৃদ্ধি করতে শুরু হয় এই মহাকালীর পুজো।

দেবীর ১০ মাথা, ১০ হাত এবং ১০ পা রয়েছে। প্রতিমায় শিবের কোন অস্তিত্ব নেই। দেবীর পায়ের তলায় রয়েছে অসুরের কাটা মুণ্ডু।কিছু ধর্ম শাস্ত্রে এই রূপের উল্লেখ থাকলেও দেবীর এই রূপের পুজোর প্রচলন খুব একটা হয়নি।শোনা যায় বিহারের বিন্দুবাসিনীতে পাহাড়ের গায়ে প্রাচীন যুগে খোদাই করা রয়েছে এই মূর্তি।এছাড়া এই মূর্তির অস্তিত্ব খুব একটা কোথাও চোখে পড়েনা।

এখানে কালী পুজোর কিছু রীতি নীতি বেশ অদ্ভুত। আজও প্রথা মেনে দিনের আলোয় পূজিতা হন দশ মাথা কালী। বলি প্রথা আজও আছে এবং শোল মাছের টক বিশেষ প্রসাদ হিসেবে চলে আসছে বহু দিন থেকে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে যেখানে মহাকালীর মন্দির রয়েছে, সেখানে তন্ত্র সাধনা করতেন এলাকার এক তন্ত্র সাধক।সাধনার জন্য তৈরি করেন পঞ্চমুণ্ডির আসন। সেই আসনের ওপরে দেবীর বেদি নির্মিত হয়েছে। আজও তন্ত্র মতেই দেবীর পুজো হয়।

প্রতিবছর কালী পুজোয় প্রথা মেনে এখানে শোভাযাত্রা সহকারে মন্দির পর্যন্ত মাকে নিয়ে যাওয়া হয়। দেবীর পুজো দেখতে আসেন দূর দূরান্তর মানুষ।দেবী এখানে উগ্র রূপে বিরাজ করলেও তার ভক্ত দের কাছে তিনি অত্যন্ত দয়াশিলা এবং বহু মানুষের বহু মনোস্কামনা এখানে পুজো দিয়ে পূরণ হয়েছে বলে শোনা যায়।

আবার ফিরে আসবো পরের পর্বে।কালী তীর্থ
থাকবে অন্য এক কালী তীর্থের ইতিহাস।
পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।