ভক্তের ভগবান – কালীভক্ত শ্রী অন্নদা ঠাকুর 

46

ভক্তের ভগবান – কালীভক্ত শ্রী অন্নদা ঠাকুর

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজকের ভক্তের ভগবান পর্বে বাংলা তথা দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ মাতৃ সাধক এবং ঠাকুর রামকৃষ্ণ দেবের প্ৰিয় শিষ্য অন্নদা ঠাকুর অর্থাৎ অন্নদা চরণ ভট্টাচার্য কে নিয়ে আলোচনা লিখবো।

 

অন্নদা ঠাকুরের আসল নাম অন্নদাচরণ ভট্টাচার্য। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন বাংলাদেশের চট্টগ্রামে। তাঁর মায়ের নাম তিলোত্তমা দেবী। বাবার নাম অভয়চরণ ভট্টাচার্য। তিন সন্তানের মধ্যে অন্নদাচরণ ছিলেন মেজো। মেধাবী ছাত্রটি আয়ুর্বেদ চিকিৎসক হতে লেখাপড়ার জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। পেশায় তিনি ছিলেন আয়ুর্বেদ চিকিৎসক।কলকাতায় থাকাকালীন শ্রীরামকৃষ্ণের স্বপ্ন দেখেন। বাংলাদেশের বাড়িতে মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও দেখেন সেই শ্রীরামকৃষ্ণের স্বপ্ন।

 

ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব তার ভক্ত তথা শিষ্য অন্নদা ঠাকুরকে নির্দেশ দিয়ে ছিলেন কলকাতার একটি দীঘি থেকে দেবী মূর্তি উদ্ধার করে নিয়ে এসে দক্ষিনেশ্বর এর অদূরে আরিয়া দহে এক মন্দির নির্মাণ করতে এবং শর্ত ছিলো বারো বছরের মধ্যে মন্দির নির্মাণ সম্পন্ন করতে হবে না হলে সর্ব সাধারণের জন্য মন্দিরের দ্বার উন্মুক্ত থাকবেনা|অন্নদা ঠাকুর আদেশ পালন করে ছিলেন কিন্তু বারো বছরের জায়গায় পঁয়ত্রিশ বছর লেগে ছিলো মন্দির নির্মাণ সম্পূর্ণ করতে।সেই মন্দির হলো আজকের আদ্যাপীঠ মন্দির।

যেহেতু বারো বছরে মন্দিরের কাজ সম্পন্ন হয়নি তাই আজও সর্ব সাধারণের জন্য মুল মন্দিরের দ্বার বন্ধই আছে|

 

কথিত আছে এক রাম নবমীর রাতে মা আদ্যা শক্তি অন্নদা ঠাকুর কে দর্শন দিয়েছিলেন এবং আদ্যা স্তোত্র পাঠ করে শুনিয়েছিলেন এবং অন্নদা ঠাকুর এই আদ্যা স্তোত্র লিখে রাখেন যা আজও এই মন্দিরে স্বযত্নে রাখা আছে এবং নিয়মিত তা পাঠ করা হয় মন্দিরে।

 

মাত্র ৩৮ বছর বয়সে পুরীতে প্রয়াত হন অন্নদাঠাকুর।তবে তার দ্বারা শুরু হওয়া কর্মকান্ড আজও তার তৈরি প্রতিষ্ঠান নিষ্ঠার সঙ্গে করে চলেছে।অন্নদা ঠাকুর দ্বারা প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ সংঘ মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।

প্রতি বছর আদ্যা নবমী তে মন্দিরে বিশেষ পূজা এবং কালী পূজা উপলক্ষে মহা পূজার আয়োজন করা হয়|প্রতিদিন দেবী কে সাড়ে বাইশ সের চালের অন্ন ভোগ ঠাকুর রামকৃষ্ণদেবকে সাড়ে বারো সের চালের অন্ন ভোগ দেয়া হয় আদ্যাপিঠে|

 

আদ্যা শক্তি যখন তার ভক্তকে কৃপা করেন এবং তাকে দিয়ে বিশেষ কাজ করাবেন স্থির করেন তখন সেই ভক্ত হয়ে ওঠেন নিমিত্ত মাত্র সমস্ত কাজ অলৌকিক উপায়ে পরিচালিত হতে থাকে। অন্নদা ঠাকুর তার বড়ো প্রমান।

 

চলতে থাকবে ভক্তের ভগবান। ফিরবো

আগামী পর্বে আরো এক ভক্তের কথা নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।