ভক্তের ভগবান – বিষ্ণুভক্ত রাজা হরিশ্চন্দ্র

105
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজ আপনাদের মহান রাজা এবং বিষ্ণু ভক্ত হরিশ্চন্দ্রর কথা বলবো। যদিও সূর্য বংশীয় রাজা হরিশ্চন্দ্র বরুন দেবের তপস্যা করে রোহিতাস্ব কে পুত্র হিসেবে লাভ করেন তবুও মনে প্রাণে তিনি ছিলেন বিষ্ণু ভক্ত। তার স্ত্রীর ছিলেন শৈব্য।
রাজা হরিশ্চন্দ্র দান ধ্যানের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।
মার্কেন্ডয় পুরানে উল্লেখ আছে একবার রাজা হরিশ্চন্দ্র মৃগয়ায় বেরিয়ে এক নারী কণ্ঠের আর্তনাদ শুনতে পেলেন। সেই নারী কণ্ঠ ছিলো মহর্ষি বিস্বামিত্রর আরাধ্যা দেবীর। সেই বনে বিস্বামিত্র তখন গভীর ধ্যানে মগ্ন। রাজা সেই কণ্ঠশ্বর অনুসরণ করে সেই নারী কে রক্ষা করতে গেলে নিজের অজান্তে বিস্বামিত্রর তপস্যায় বিঘ্ন ঘটনা এতে ঋষি ক্ষুব্ধ হন রাজার কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দান চাইলেন এবং রাজা তাকে তার সর্বস্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন। ঋষি বিস্বামিত্র তার রাজ্য, ধন, সম্পদ সব নিয়ে নিলেন।
সর্বহারা হয়ে রাজা হরিশ্চন্দ্র কাশীতে গিয়ে নিজ স্ত্রীর পুত্র কে নিয়ে চণ্ডালের কাজ করতে শুরু করেন। অভাবের তাড়নায় তার স্ত্রীপুত্রও তার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এর পর কেটে যায় কিছুকাল। ইতিমধ্যে হরিশ্চন্দ্রর পুত্র সর্প দংশনে প্রাণ হারালে তার মৃত দেহ কাশির সেই শ্মশানে আনা হয়। পুত্র শোকে ব্যাকুল হরিশ্চন্দ্র এবং তার স্ত্রী ঠিক করলেন দুজনে একত্রে প্রাণ বিসর্জন করবেন। শেষ বারের মতো হরিশ্চন্দ্র তার আরাধ্য বিষ্ণুর উপাসনা শুরু করলেন এবং বিষ্ণুর কৃপায় স্বয়ং ধৰ্মরাজ তাকে প্রাণ ত্যাগ করতে নিষেধ করলেন এবং ইন্দ্র নিজে এসে তাদের স্বর্গে নিয়ে যেতে চাইলেন।হরিশ্চন্দ্র শুধু নিজের নয় তার প্রজা ও অনুগতদের
মুক্তি চেয়ে নিলেন।
এই ভাবে বিষ্ণু ভক্ত হরিশ্চন্দ্র তার প্রভু বিষ্ণুর আশীর্বাদে ও নিজের সততা এবং ন্যায় পরায়ণতা দিয়ে সনাতন ধর্ম শাস্ত্রে নিজেকে অমরত্ত
প্রদান করেন।
আবার ফিরে আসবো অন্য এক ভক্ত এবং ভগবানের লীলা নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।