করোনার আতঙ্ক ও আমফানের ভয়াবহ স্মৃতি কে দূরে সরিয়ে রেখে আবার কর্ম ব্যস্ত জীবনের দিকে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছি বা বলা ভালো এগিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছি কারন এটাই স্বাভাবিক,থেমে থাকলে তো চলবেনা|তাই আর কোনো উপায় নেই, আবার চ্যানেলে বসা নিয়ম করে ইউটিউব এ বা ফেসবুকে লাইভে আসা, সবই প্রায় শুরু হয়ে গেলো আর কদিনের মধ্যে চেম্বার ও শুরু হয়ে যাবে আশা করি|আর তার সাথে তো চলতেই থাকছে আমার আধ্যাত্মিক লেখা লেখি|আজ সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ফিরে এলাম দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের এক সম্পূর্ণ নতুন এক পর্ব নিয়ে|আজ লিখবো সোমনাথ মন্দির নিয়ে|
গুজরাটের বেরাবলে অবস্থিত সোমনাথ মন্দির দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম|এর ইতিহাস অতি প্রাচীন ও ঘটনাবহুল|ভারতের জনপ্রিয় তীর্থ ক্ষেত্র গুলির মধ্যে একদম প্রথম সারি তে আছে এই বিশেষ মন্দিরটি|সোমনাথ কে ঘিরে আছে নানা গল্প, ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক ঘটনা আর সব কিছুর উপরে আছে এই তীর্থ ক্ষেত্র কে কেন্দ্র করে অসংখ্য মানুষের বিশ্বাস ও শ্ৰদ্ধা|সোমনাথ শব্দের প্রকৃত অর্থ হলো চন্দ্র দেবতার রক্ষা কর্তা, এই মন্দির চিরন্তন পীঠ নামেও পরিচিত কারন অতীতে একাধিক বার আক্রান্ত হয়েছে এই মন্দির, ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে কিন্তু প্রতিবারই পুনরায় মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে সোমনাথ মন্দির|
পুরান মতে দক্ষ প্রজাপতি একবার চন্দ্র কে অভিশাপ দিয়েছিলেন এবং সেই অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে চন্দ্রদেব শিবের আরাধনা শুরু করেন|তার আরাধনায় তুষ্ট হয়ে শিব প্রকট হন ও চন্দ্র কে অভিশাপ থেকে নিষ্কৃতি দেন|চন্দ্র পরবর্তীতে শিব কে সন্তুষ্ট করার জন্য একটি স্বর্ণ নির্মিত শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন যা সোমনাথ মন্দির নামে খ্যাত|সোমনাথ মন্দিরের শিব সোমেশ্বর মহাদেব নামে পরিচিত |বহুকাল পড়ে শিব ভক্ত রাবন রুপো এবং চন্দন কাঠ দিয়ে এই মন্দির পুনর্নির্মাণ করেন বলে বিশ্বাস করা হয়|তারও অনেক পড়ে ভীমদেব নামে এক রাজপূত রাজা সোমনাথ মন্দিরের সংস্কার করে পুনর্নির্মাণ করেন|তবে বর্তমান সময়ে আমরা যে মন্দির টি দেখতে পাই তার নির্মাণের রূপকার ভারতের লৌহ পুরুষ সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল|
কথিত আছে মন্দিরটি খ্রিস্টের জন্মের আগেও বিদ্যমান ছিলো|আরবের শাসক জুনায়েদ, আলাউদ্দিন খিলজি, মামুদ গজনী ও সুলতান মুজাফ্ফর শাহ পর্যায় ক্রমে সোমনাথ মন্দির আক্রমণ করেন লুঠপাঠ চালান ও ধ্বংস করেন|সোমনাথ মন্দির তবু অক্ষয় ও অমর |সনাতন ধর্মের প্রতীক হয়ে তা আজও স্বমহিমায় বিরাজমান|এথেকে এও প্রমান হয় যে ধ্বংসের থেকে সৃষ্টি বড়ো|বর্তমানে সোমনাথ মন্দির শ্রীসোমনাথ ট্রাস্ট দ্বারা পরিচালিত হয়|
গুজরাট তথা ভারতের অন্যতম দর্শনীয় স্থান এই জ্যোতির্লিঙ্গ যা দেখতে দেশ বিদেশ থেকে প্রতি বছর অসংখ্য ভক্ত ও দর্শনার্থী ভীড় জমান সোমনাথ প্রাঙ্গনে|আপনারাও চাইলে সময় সুযোগ বুঝে ঘুরে আসতে পারেন কোনো এক সময়ে|এক অপূর্ব আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকবেন|
জ্যোতির্লিঙ্গ সোমনাথ নিয়ে আজ এটুকুই তবে আমি আপনাদের পাসে আছি সর্বদা, ইউটিউব ফেসবুক ও টেলিভিশিন এর মাধ্যমে,যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত বিষয়ে নির্দ্বিধায় যোগাযোগ করতে পারেন উল্লেখিত নাম্বারে|ফিরবো পরের পর্বে অন্য কোনো জ্যোতির্লিঙ্গের কথা নিয়ে, এক নতুন পর্বে |ধন্যবাদ|