কালী কথা – বিষ্ণুপুরের শ্মশান কালীর পুজো

18

কালী কথা – বিষ্ণুপুরের শ্মশান কালীর পুজো

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

দেবী কালীকার বিভিন্ন রূপের মধ্যে তার শ্মশান কালী রূপ অন্যতম। একটা সময় পর্যন্ত এই রূপের পুজোর প্রচলনই বাংলায় বেশি ছিলো। ডাকাত এবং তান্ত্রিকরাই শ্মশানে কালী পুজো করতো।পরবর্তীতে সাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগিশ এর হাত ধরে দেবী দক্ষিনা কালী বঙ্গ সমাজে জনপ্রিয়তা পায়।আজকের কালী কথায় আপনাদের দক্ষিণ বঙ্গের একটি শ্মশান কালীর পুজোর কথা লিখবো।

আজ থেকে বহু বছর আগে বিষ্ণুপুরে আদিগঙ্গার পাড়ে শ্মশানে ভিড় জমাতেন তান্ত্রিক ও সাধকরা। শব সাধনায় বসতেন অনেকেই। এখনও শ্মশানে ঢুকলে গা ছমছমে পরিবেশ। স্থানীয়দের বিশ্বাস, তান্ত্রিকদের সাধনার জোরে আজও রাতের অন্ধকারে জেগে ওঠে শ্মশান। ঘোরাফেরা করে অপঘাতে মৃতদের আত্মা।আজ থেকে প্রায় একশো বছর আগে এই শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলেই টালির ছাউনির নীচে কালী পুজো শুরু করেছিলেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী। একশো আটটি নরমুণ্ড দিয়ে চলত তন্ত্রমতে দেবীর উপাসনা।তারপর বহু সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। পাল্টেছে এই স্থানের পরিবেশ তবে একই রয়ে গেছে সেই পুজো এবং এই পুজোর প্রতি মানুষের আস্থা।

আজও পুরনো রীতি মেনে তন্ত্রমতে গা ছমছম পরিবেশে একশো আটটি নরমুণ্ড সহযোগে পুজো হয় মা কালীর। রাতে শিয়ালভোগের পাশাপাশি মদ, মাংস, ছোলা নিবেদন করা হয়।

আজও দক্ষিণ বিষ্ণুপুরের চক্রবর্তী পরিবার বংশ পরম্পরায় এই পুজো চালিয়ে আসছে।প্রতি অমাবস্যায় তন্ত্র সাধনার জন্য বহু মাতৃ সাধক আসেন। আসেন বহু সাধারণ ভক্ত।

এখানে দেবী কালীর চোখ আর জিভ সোনা দিয়ে তৈরি। হাতে থাকে রুপোর খাঁড়া। মাকে পুজোর দিন পরানো হয় সোনার গয়না।

শোনা যায় সাধক মণিলাল চক্রবর্তী মায়ের স্বপ্নাদেশ পান। মা বলেন।বছরে একবার পুজো করলে হবে না। নিত্যপুজো করতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই গঙ্গার পাড়ে কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন তিনি শুরু হয় নিত্য পুজো।

দীপান্বিতা অমাবস্যা উপলক্ষে চলত থাকবে
ধারাবাহিক কালী কথা। ফিরে আসবো অন্য
একটি মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।