কালী কথা – মহারাজা নন্দ কুমারের কালী 

67

কালী কথা – মহারাজা নন্দ কুমারের কালী

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বীরভূমের নলহাটির কাছেই আকালীপুরে আছে

মহারাজা নন্দকুমারের গুহ্য কালী মন্দির।

যদিও এই কালীমূর্তিটি তাঁর দ্বারা নির্মিত হয়নি।

তা আরো প্রাচীন।আজ সেই ইতিহাস

আপনাদের জানাবো

 

জনশ্রুতি আছে মগধরাজ জরাসন্ধ এই মূর্তিটি নির্মাণ করেছিলেন। কালক্রমে বিভিন্ন রাজার হাতে পূজিত হওয়ার পর কাশীরাজ চৈত সিংহের রাজ্যের এক কৃষক তার জমিতে মূর্তিটি খুঁজে পান। সংবাদ পেয়ে চৈত সিংহ মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেবী গুহ্যকালিকার প্রতিষ্ঠা করতে চান।সেই স্বপ্ন সত্যি হয়নি কারন ওয়ারেন হেস্টিংসও এই মূর্তির সন্ধান পেয়ে এটিকে লন্ডনের জাদুঘরে প্রেরণে উদ্যোগী হন। মূর্তিটি ব্রিটিশদের হাত থেকে রক্ষা করতে চৈত সিংহ সেটিকে গঙ্গাবক্ষে লুকিয়ে রাখেন।

 

বহু যুগ অতিক্রান্ত হয়।তারপর মহারাজা নন্দকুমার স্বপ্নাদেশ পেয়ে সেটিকে কাশী থেকে নিজের চেষ্টায় উদ্ধার করে নিজ জন্মস্থান বীরভূমের ভদ্রপুর গ্রামে নিয়ে আসেন। নন্দকুমার নিজে ছিলেন পরম শাক্ত ও দেবী মহাকালীর ভক্ত। তিনি ১৭৭৫ সালের গোড়ায় তিনি মুর্শিদাবাদ-বীরভূমের সীমান্তবর্তী আকালীপুর গ্রামে দেবী গুহ্যকালীর মন্দির নির্মাণ শুরু করেন। তবে নির্মাণ শেষ করার আগেই বৈপ্লবিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরেন এবং তার মৃত্যু দ্বন্দ্ব হয়।

 

মহারাজা নন্দ কুমারের পুত্র পিতার শেষ ইচ্ছে স্বরূপ দেবী গুহ্যকালীর মন্দির প্রতিষ্ঠা সম্পূর্ণ করেন ও নিয়মিত দেবীর পূজার ব্যবস্থা করেন।

 

গুহ্যকালী দ্বিভুজা, সর্পভূষিতা ও খড়্গহস্তা। তাকে সূর্যকালী বা গোপন কালী নামেও ডাকা হয়।

যে কোন কালী মূর্তির সাথে আমরা শায়িত অবস্থায় দেবাদিদেব মহাদেব কে দেখতে পাই‌। কিন্তু গুহ্য কালীর মূর্তির সাথে শিব শায়িত অবস্থায় থাকে না‌।সাধারণত তান্ত্রিকরাই এই দেবীর পুজো করে থাকেন। গৃহস্ত পরিবারের গৃহ মন্দিরে দেবীর পুজো হয়না সাধারনত।এটি দেবীর উগ্র এবং ভীষণ দর্শনা রূপ।

 

বহু এমন ঐতিহাসিক কালী মন্দির এবং

দেবী কালীর নানা রূপ নিয়ে আলোচনা

এখনো বাকি আছে। আবার কালী কথা

নিয়ে ফিরে আসবো।আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।