কালী কথা – জীবন্ত কালী শ্যামসুন্দরীর পুজো 

298

কালী কথা – জীবন্ত কালী শ্যামসুন্দরীর পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

এই কলকাতার  উত্তরে বিরাজমান ‘জীবন্ত কালী’র বিশাল মন্দির। তিনি আবার শ্যামসুন্দরী নামেও পরিচিত। কালী এখানে পূজিতা ছোট্ট মেয়ে রূপে।আজ কালী কথায় জানাবো এই মন্দিরের বর্ণময় ইতিহাস।

 

শ্যামসুন্দরীকে ঘিরে প্রচলিক আছে এক অলৌকিক কাহিনী। সে বহুকাল আগের কথা। দিনটি ছিল অমাবস্যা তিথি। শ্যামসুন্দরীর মন্দিরের তৎকালীন পুজারী বাজারে গিয়েছিলেন অমাবস্যার পুজোর বাজার করতে। সেই সময়ে বছর পাঁচেকের একটি মেয়ে তাঁর কাছে চালকলা খেতে চেয়ে সে জানায়, দু’দিন ধরে কিছু খায়নি সে। কিন্তু, পুরোহিতের এসব মোটেই পছন্দ হয়নি। তিনি ওই বালিকাকে অবজ্ঞা করে নিজের কাজে চলে যান।

 

সন্ধ্যায় যখন মন্দিরে দেবীর ভোগের ব্যবস্থা হয়েছিল অমাবস্যার সে রাতে। নিয়ম মেনে অন্ধকারেই চলছিল দেবীর আরাধনা। পুজো চলাকালীন পুরোহিত হঠাৎ লক্ষ্য করেন যে শুধু মহাদেবই শায়িত রয়েছেন। কিন্তু, তাঁর ওপর কালী নেই। প্রথমে ভ্রম মনে হলেও পরে ঘি-এর প্রদীপ বাড়িয়ে মূর্তি দেখার চেষ্টা করেন এবং একই জিনিস দেখেন। তৎক্ষণাৎ নুপুরের শব্দে সম্বিত ফেরে পুরোহিতের।সে দিনই সয়ং তিনিই সকালে ছোট্ট মেয়ে রূপে যে তিনিই খাবার চাইতে এসেছিলেন সে কথাও জানিয়েছিলেন পুরোহিতকে। সেই থেকেই চলছে চালকলা দিয়ে শ্যামসুন্দরীর পুজোর রীতি।

 

এখানে দেবী বালিকা তাই অম্ববাচি পালিত হয় না এই মন্দিরে। বলির কোনও রীতি নেই। পুরোপুরি নিষিদ্ধ মাছ, মাংস।মন্দিরের বেদীতে উপবেষ্টিতা শ্যামসুন্দরী। তাঁর গা ঘেঁসেই বসে রয়েছেন জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা। শ্যামসুন্দরীর পাশের ঘরেই রয়েছেন ভৈরব।দেবী কিশোরীদের মতো সাজতে ভালো বাসেন তাই তাকে প্রতিটি বিশেষ পুজোয় সুন্দর করে সাজানো হয়।

 

ভক্তদের বিশ্বাস, কাউকে কক্ষণও খালি হাতে ফিরিয়ে দেন না শ্যামসুন্দরী। ভক্তে কাতর প্রার্থনায় ঠিক সাড়া দেন তিনি, পূরণ করেন প্রত্যেকের মনবাঞ্ছা।

 

বাংলার এমন সব প্রাচীন কালী মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে চলতে থাকবে কালী কথা। যথা সময়ে ফিরে আসবো পরবর্তী পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।