পঁচিশে বৈশাখ উপলক্ষে বিশেষ পর্ব
জানা অজানা রবীন্দ্রনাথ
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য নিয়ে যতো না আলোচনা হয় তার দৈনন্দিন জীবন, স্বভাব, ভালো লাগা মন্দ লাগা, অর্থাৎ মানুষ রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে ততটা আলোচনা হয়না। আজ জন্ম জয়ন্তীতে তার মানবিক দিক গুলি যেমন রস বোধ, খাওয়া দাওয়া, প্রকৃতি প্রেম নিয়ে একটু লেখার চেষ্টা করছি।
অসাধারণ রসিক মানুষ ছিলেন কবিগুরু।
একবার চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় গেছেন শিলাইদহে জমিদার রবীন্দ্রনাথের কাছে লেখা আনতে। চারুচন্দ্র তখন ‘প্রবাসী’ পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত। রবীন্দ্রনাথ তখন অবস্থান করছিলেন পদ্মার ওপারে বজরায়। নদীর ঘাট থেকে বজরা পর্যন্ত একটা তক্তার সাঁকো পেতে দেয়া হয়েছে।
চারুচন্দ্র পা টিপে টিপে নৌকায় উঠে আসছেন। বজরার ছাদ থেকে এ দৃশ্য দেখে রবীন্দ্রনাথ সাবধান করলেন চারুকে, ‘সাবধানে পা ফেলো। এ জোড়াসাঁকো নয়!’ তার এই মন্তব্য শুনে আশপাশের সবাই হেসে উঠে ছিলেন|
রবীন্দ্রনাথের রসনা বিলাস নিয়েও বহু মিথ চালু আছে। অনেকে বলেন কবি রাজি কাটলেট এর কবি আসলে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। এই নিয়ে একটি গল্পও আছে।একবার তিনি বিখ্যাত বসন্ত কেবিনে গিয়েছিলেন কাটলেট খেতে।কাটলেটের উপরে থাকা পাউরুটির প্রলেপ কবির একেবারে পছন্দ হয়নি। বাবুর্চি তা জানতে পেরে ডিমের গোলায় ডুবিয়ে বানিয়ে দিলেন এক নতুন কাটলেট। সেটা খেয়ে কবির বেশ পছন্দ হয়েছিল।কবির মন রাখতে যেহেতু আবিষ্কার তাই সেই থেকে এই কাটলেটের নাম দেওয়া হয় ‘কবিরাজি কাটলেট’|
বর্ষা ছিলো কবির প্রিয় ঋতু।বর্ষা ঋতু কবির অজান্তেই যেন তাঁর অন্তর সত্তায় স্থায়ী আসন গেড়ে বসেছিল। তাই রবীন্দ্র সঙ্গীতে ও সাহিত্যে সর্বত্রই তার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।বর্ষায় কবি শান্তি নিকেতনেই থাকতে পছন্দ করতেন। সেই সময় বর্ষার বোলপুর যেনো এক স্বপ্নের জগৎ। সেই জগৎ ধরা দিতো তার গানে তার কবিতায়।
জন্ম দিনে তার চরিত্রের কিছু বিশেষ দিক ছুঁয়ে যেতে চেষ্টা করলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। গুরুদেব কে জানাই প্রণাম এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি। ভালো থাকুন। পড়তে থাকুন।