এককালে হুগলী জেলা ছিলো ডাকাত দের জন্য বিখ্যাত বা বলা ভালো কুখ্যাত আর ডাকাত থাকলে ডাকাত কালীও থাকবেন সেটাই স্বাভাবিক হুগলতেও এই রীতির ব্যতিক্রম হয়নি ।আজ এই হুগলীর ডুমুর দহের বিখ্যাত ডাকাত কালী পুজো নিয়ে লিখবো।
এক সময়ে হুগলির গঙ্গা তীরবর্তী দ্বীপ বা দহ ছিলো এই অঞ্চল চারপাশে ছিলো ডুমুর গাছের জঙ্গল।খুব সম্ভবত সেই ঘন ডুমুর গাছের ঝোপ ঝাড় থেকেই নাম হয় ডুমুরদহ।এই ডুমুর দহ ছিলো ডাকাত দের আস্তানা আর এই ডাকাত দের দলকে নেতৃত্ব দিতেন বিশ্বনাথ চৌধুরী।
ব্রিটিশ আমলে বিশে ডাকাত ছিলো সমগ্র হুগলী জেলার সব থেকে প্রভাবশালী ব্যাক্তি দের একজন। তার আরো একটি পরিচয় ছিলো। তিনি একাধারে ছিলেন জমিদার আবার ডাকাতিতে ছিলেন সিদ্ধহস্ত।দিনের বেলা বিশ্বনাথ চৌধুরী নামে জমিদারি চালাতেন আবার রাতে বিশে ডাকাত নামে ডাকাতি করে বেড়াতেন। এসবই অবশ্য জনশ্রুতি। শোনাযায় দলবল নিয়ে নৌকোয় চেপে যশোহরে গিয়ে পর্যন্ত ডাকাতি করতেন তিনি । ডাকাতি করতে যাওয়ার সময়ে ডুমুর দহের কালী মন্দিরে পুজো দিয়ে অভিযানে বেরোতেন।
এই কালী মন্দির ঠিক কবে এবং কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়না।
তবে স্থানীয় জমিদার পরিবার এই মন্দিরের রক্ষনা বেক্ষন করতো এমনটাই মনে করা হয়।
অতি সাদামাটা এই মন্দির। দেখতে পিরামিডের মতো। তবে চারতলা এই মন্দিরের একাধিক বার সংস্কার হয়েছে। তাই স্থাপত্যেও রয়েছে আধুনিকতার ছাপ। অতি প্রাচীন কাল থেকেই এই মন্দির এখানে আছে বলে মনে করা হয়।
জঙ্গলে ভরা স্থানে দেবীর অবস্থান তাই অনেকেই দেবীকে বুনো কালীও বলে থাকেন।
পুজো পদ্ধতিতেও রয়েছে কিছু বিশেষত্ব।এখানে আগে শাক্তমতে পুজো হত। পরবর্তী সময়ে
শুরু হয় বৈষ্ণব মতে পুজোপাঠ। তবে, আজও এখানে মানত পূরণ করতে পশু বলি দেওয়ার রীতি প্রচলিত রয়েছে।
অসংখ্য ভক্তদের দাবি, দেবী অত্যন্ত জাগ্রত। মানত করলে, তা পূরণ হয়। শুধু তাই নয়, এই মন্দিরের পাশেই রয়েছে চারচালা ভৈরব মন্দির।
দেবীর ভৈরবও অত্যন্ত জাগ্রত।প্রায় প্রতিটি বিশেষ তিথিতে বহু ভক্তের ভিড় হয় এখানে।
বাংলার অনেক কালী মন্দিরের কথা এখনো
বলা বাকি আছে। আবার ফিরে আসবো
বাংলার কালী নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুনা।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।