আজ মকর সংক্রান্তি।বাংলা মাস অনুযায়ী পৌষ মাসের শেষ দিনটিতে এই উৎসব পালন করা হয় তবে শুধু বাংলায় বাঙালিরাই নন, আমাদের দেশের নানা প্রান্তে এই দিনটিকে নানা ভাবে বিশেষ বিশেষ উৎসবের সঙ্গে পালন করা হয়, পালন করা হয় কিছু উপাচার ও অবশ্যই গঙ্গা স্নানের মাধ্যমে পূর্ণতা পায় এই মকর সংক্রান্তি|
শব্দের মানে খুঁজলে দেখা যায় সংক্রান্তি শব্দের অর্থ সঞ্চার বা গমন করা। সূর্যের মকর রাশিতে গমন হয় এই তিথিতে|সেই দিক দিয়েএই তিথি
জ্যোতিষ শাস্ত্রে একটা বড়ো ইভেন্ট।
এই আধুনিক সময়েও এখনও দূর গাঁয়ে পৌষ সংক্রান্তির উৎসব নিয়ে আসে আনন্দ বার্তা। পৌষ সংক্রান্তিতে নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় স্নিগ্ধ সবুজ গ্রাম। শহরের ব্যস্ত জীবনেও দোকানে দোকানে সেজে উঠা তিল, কদমা, প্যাকেটের চালের গুঁড়োর প্যাকেট, ঝোলা গুড়ের হাঁড়ি জানান দেয় চলে এসেছে পৌষ সংক্রান্তি। হালে পিঠে থেকে পায়েস সবই সহজলভ্য নির্দিষ্ট দোকানে। তবে শুধু গ্রামে নয়, শহরেও বেশ কিছু পরিবার আজও সমান আন্তরিকতার সঙ্গে এবং নানা আয়োজনে পালন করে পৌষ সংক্রান্তির উৎসব। বাড়িতেই তৈরি করেন পিঠে-পুলি। এই পৌষ বা মকর সংক্রান্তি বাঙালি সংস্কৃতির একটি বিশেষ উৎসব বা বিশেষ ঐতিহ্যবাহী দিন।আবার কৃষি প্রধান বাংলায় এই সময়ে নতুন ফসল বিশেষ করে ধান তোলা হয়।
পুরান মতে অনুযায়ী, এই দিনই দেবতাদের সঙ্গে অসুরদের যুদ্ধ শেষ হয়েছিল। বিষ্ণু অসুরদের বধ করে তাঁদের কাটা মুন্ডু মন্দিরা পর্বতে পুঁতে দিয়েছিলেন, মকর সংক্রান্তি তে, তাই মকর সংক্রান্তির দিনই সমস্ত অশুভ শক্তির বিনাস হয়ে শুভ শক্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে আজও মানা হয়ে থাকে, মকর সংক্রান্তির এই মহাতিথিতেই মহাভারতের পিতামহ ভীষ্ম শরশয্যায় ইচ্ছামৃত্যু গ্রহণ করেছিলেন।
মকর সংক্রান্তির দিন সাধারণত সূর্যদেবের পুজো করা হয়। তাঁর আশীর্বাদে আমাদের সকল রোগ-ব্যাধি দূর হয় বলে শাস্ত্রে উল্লেখ আছে তাই এই বিশেষ দিনটিতে সকলেই নিজের ঘরবাড়ি, বিশেষ করে রান্নাঘর ও রন্ধন দ্রব্যাদি পরিষ্কার করেন, যাতে সমস্ত রকম ‘অপরিশুদ্ধতা’ দূর হয়।
নিজের মতো করে অল্প কথায় আজ এই বিশেষ তিথি অর্থ্যাৎ মকর সংক্রান্তির আধ্যাত্মিক এবং শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করলাম এই পুন্য তিথিতে। আশা করি এই প্রচেষ্টা আপনাদের ভালো লাগবে।সবাইকে মকর সংক্রান্তির অসংখ্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।ভালো থাকুন।
পড়তে থাকুন।ধন্যবাদ।