আজকের পর্বে লিখবো একান্নপীঠ শোন্দেশ নিয়ে। দেবীর মন্দিরটি মধ্যপ্রদেশের অমরকন্টক এ অবস্থিত। পুরান অনুসারে এখানে দেবী সতীর ডান নিতম্ব পড়েছিল। এই শক্তি পীঠে নর্মদা রূপে বিরাজ করছেন। দেবীর ভৈরব হলেন ভদ্রসেন।
পুরানে মতে মহাদেব যখন ত্রিপুর অর্থাৎ তিনটি প্রাচীন নগরীকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ভষ্মিভূত করেছিলেন সেই সময় কিছু ভস্ম অথবা ছাই পড়েছিল কৈলাসে। কিছুটা পড়েছিল অমর কণ্ঠকে আর কিছুটা ছাই মহাদেব নিজে স্বর্গে সঞ্চিত রেখেছিলেন। এছাড়াও মনে করা হয় যে, যে ভস্ম অর্থাৎ ছাই অমর কন্ঠকে পড়েছিল তা থেকে পরে কোটি কোটি শিবলিঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে।তাই এই পীঠটি একাধারে শক্তি পীঠ আবার শৈব্য তীর্থ।
মহাভারতের বনপর্বে এই পীঠের উল্লেখ আছে।
ঋষি পুলস্থ রাজা যুধিষ্টিরকে বলেছিলেন এই পবিত্র স্থানে নর্মদা নদীতে স্নান করলে অশ্বমেধ যজ্ঞের ফল লাভ হয়।আজও বিশ্বাস করা হয় যে অমরকন্টক এই জায়গাটিতে দেবতাদের বাসস্থান তাই এখানে যার মৃত্যু হবে সে সরাসরি বৈকুণ্ঠ যাত্রা করবে।
এই শোন্দেশ শক্তি পীঠ তথা নর্মদা মন্দিরটি আজ থেকে প্রায় ছয় হাজার বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল। মন্দিরের ভিতরের বেদীতে দেবী বিরাজ করছেন। সুন্দর এই বেদীটি রূপা দিয়ে তৈরি।
প্রাচীন কালে তৈরী এই মন্দিরের কারুকার্য এবং ভাস্কর্য আজও বিস্ময় জাগায়।মন্দিরের চারপাশে ছোট ছোট আরও অনেকগুলি পুষ্করিণী অথবা পুকুর আছে।মন্দিরের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নর্মদা নদী এবং কাছেই বিন্ধ্য পর্বত আর সাতপুরা পর্বত একসাথে মিশেছে।সব মিলিয়ে ওই শক্তি পীঠ সংলগ্ন প্রাকৃতিক পরিবেশ অতি মনোরম।
এই মন্দিরের পাশেই রয়েছে মাঈ কি বাগিয়া অর্থাৎ দেবী মায়ের বাগান। জনশ্রুতি আছে যে এই বাগানে নাকি দেবী নর্মদা নিয়মিত
ফুল তুলতে আসেন।
শোনদেশ শক্তি পীঠে সারা বছরই পূজা হয়
এবং প্রতিদিন ভক্তদের ভিড় লেগে থাকে।
তাছাড়া এই শক্তিপীঠ মহাশিবরাত্রি পালনের জন্য খুবই বিখ্যাত।
আগামী পর্বে আবার ফিরে আসবো অন্য একটি শক্তি পীঠের কথা নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।