একান্ন পীঠ – কঙ্কালী তলা

49
বাংলায় অবস্থিত শক্তি পীঠের অন্যতম শক্তিপীঠ হল বীরভূম জেলার বোলপুর মহকুমায় অবস্থিত বিখ্যাত কঙ্কালীতলা মন্দির ।আজকের পর্বে এই
প্রাচীন কঙ্কালী তলার ইতিহাস এবং
তার আধ্যাত্মিক মাহাত্ম নিয়ে লিখবো।
তন্ত্রচূড়ামতির মতে, এটি ২৮ নং সতীপীঠ।
প্রাচীনকালে এই জায়গাটি কাঞ্চি নামে প্রসিদ্ধ ছিল।পুরান মতে মতে দেবী সতীর কাঁখাল অর্থাৎ কোমর পড়েছিল বীরভূম জেলার বোলপুরের কোপাই নদীর তীরে । মতান্তরে দেবী সতীর কঙ্কাল পড়েছিল এই স্থানে।তাই পরবর্তীকালে কঙ্কালীতলা নামেই জনপ্রিয়তা লাভ করে।ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যগ্রন্থে লেখা রয়েছে, এখানে সতীর কটিদেশ বা কোমরের অংশটি পরেছিল।এখানে দেবীর নাম দেবগর্ভা ও দেবীর রক্ষক ভৈরবের নাম রুরু ।
জনশ্রুতি আছে যে আজ থেকে কয়েকশো
বছর আগে এক সাধু স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পীঠের অস্তিত্ব অনুধাবন করেছিলেন। তার পরে অন্য এক মাতৃসাধক দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পীঠে পুজোর শুরু করেন।
এই শক্তি পীঠে রয়েছে একটি রহস্যময় জলাশয় বা কুন্ড শোনা যায় কঙ্কালীতলার কুন্ডের সঙ্গে কাশীর মণিকর্ণিকা ঘাটের সরাসরি সংযোগ আছে । এই জলাশয়েই আছে দেবী সতীর প্রস্তুরীভূত দেহেরঅংশ যা কুড়ি বছর অন্তর কুন্ড থেকে তোলা হয় পুজার্চনার জন্য। পুজোর পরে আবার কুন্ডের জলে ডুবিয়ে রাখা হয়।
দেবীর কোনও মূর্তি নেই কঙ্কালী তলায় তার বদলে এখানে রয়েছে শ্মশানকালীর বড় বাঁধানো ছবি। যাকে দেবী রূপে পুজো করা হয়।
নিত্য পুজো ও ভোগ বিতরণ হয় এই কালী ক্ষেত্রে এই কঙ্কালীতলা গুপ্ত তন্ত্রসাধনার জন্য খুবই বিখ্যাত।তন্ত্র সাধকদের পাশাপাশি এখানে প্রায় সারা বছর সাধারণ পর্যটকদের ভিড় লেগে
থাকে এই শক্তি পীঠে।
ফিরে আসবো পরের পর্বে অন্য কোনো শক্তি পীঠ সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।