একান্ন পীঠ – প্রভাস

45
একান্ন পীঠের অন্যতম শক্তি পীঠ গুজরাটের সৌরাষ্ট্র অঞ্চলের সোমনাথ জেলায় অবস্থিত।এই শক্তি পিঠের নাম প্রভাস।সতীর পাকস্থলী অথবা উদারভাগ এই স্থানে পতিত হয়েছিল।
প্রভাস শক্তিপীঠে অধিষ্ঠিত দেবী হলেন চন্দ্রভাগা এবং ভৈরব হলেন বক্রতুণ্ড।
প্রভাস শক্তি পীঠের সাথে জড়িত রয়েছে একটি পৌরাণিক কাহিনী পৌরাণিক কাহিনীএই স্কন্ধ পুরাণ অনুসারে সত্য যুগে চন্দ্র প্রজাপতি দক্ষ রাজার ২৭ জন কন্যাকে বিবাহ করলেও শুধুমাত্র রোহিনীর প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন বেশি তার বাকি ২৬ জন স্ত্রী অবহেলিত ও অপমানিত বোধ করে তাদের বাবা দক্ষকে নালিশ করেন।
এই কথা শুনে দক্ষ রাজা, চন্দ্রকে অভিশাপ দিয়েছিলেন যে তিনি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে যাবেন। তখন চন্দ্র শাপমোচনের জন্য এই প্রভাস নামক স্থানে এসে শিবের আরাধনা করতে শুরু করেন। শিবের কৃপায় তার শাপ মোচন হয় এবং পরবর্তীতে প্রভাস তীর্থের কাছেই স্বয়ং চন্দ্র দেব সোমনাথ মন্দির তৈরি করেছিলেন।
বর্তমানে সোমনাথ মন্দির থেকে কিছুটা দূরে প্রভাস শক্তি পীঠ বা চন্দ্রভাগা দেবীর এই মন্দিরটি অবস্থিত। সেই পৌরাণিক কালের ধ্বংস হয়ে যাওয়া মন্দিরটির রুপই এখনও বর্তমান।
পাথরের তৈরি এই মন্দিরের গায়ে বিভিন্ন দেবতার মূর্তি খোদাই করা আছে। সঠিক কোন সময়ে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়েছিল তার কোন ঐতিহাসিক তথ্য আজও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
তবে ঐতিহাসিক তথ্য মতে চন্দ্রভাগা দশভুজা সিংহ বাহনা রূপে রানী অহল্যা বাইকে স্বপ্নে আদেশ দিয়ে বলেন যে, ভূগর্ভে চাপা পড়া সতীর অঙ্গ উদ্ধার করে মন্দির সংস্কার করে পুজো শুরু করতে ।এরপরই দেবীর স্বপ্নের আদেশ মতো অহল্যা বাই সেই অঙ্গশিলা উদ্ধার করে দেবীর মন্দির সংস্কার করে নিত্যদিনের পুজোর আয়োজন করেন।সেই সময় থেকেই প্রভাস শক্তিপীঠের জনপ্রিয়তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে।দেবী চন্দ্র ভাগা কে দেবী উমা নামেও ডাকেন তার ভক্তরা।
শিবরাত্রি এবং কার্তিক পূর্ণিমার সময় সোমনাথ মন্দিরে ভিড় হওয়ার দরুন এখানেও ভিড় হয়। তবে নবরাত্রির সময় এখানে প্রচুর পরিমাণে ভক্তদের সমাগম দেখা যায়। তাছাড়া প্রায় সারা বছর ধরে এখানে পূজা অর্চনা চলতে থাকে। আর তাই সারা বছর সমগ্র দেশ থেকে এবং দেশের বাইরে থেকেও বিভিন্ন মানুষ এখানে আসেন পূজা দিতে।
আপাতত প্রভাস শক্তি পীঠ নিয়ে আলোচনা এখানেই শেষ করছি।ফিরে আসবো পরবর্তী শক্তিপীঠ নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।