শান্তিপুর তথা নদিয়ার প্রাচীন কালীপুজোগুলির মধ্যে অন্যতম মহিষখাগীর পুজো।দেবীর এই অদ্ভুত নামের কারন এক অলৌকিক ঘটনা।আজকের কালীকথায় জানাবো এই মহিষ খাগী নামক কালী পূজোর অলৌকিক বৃত্তান্ত।সময়টা আনুমানিক সাড়ে পাঁচশো বছর আগের কোনও এক সময়।বাংলায় তখন নবাবী আমল চলছে। নদীয়া রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তখন সিংহাসনে।শান্তি পুরে এক তান্ত্রিক পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে সাধনা করতে করতে মায়ের দর্শন পান।স্বপ্নে দেবী সেই তান্ত্রিককে মহিষের রক্ত দিয়ে তাঁকে পুজো করতে নির্দেশ দেন। অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয় সেই নির্দেশ।সেই থেকেই দেবীর নাম এখানে ‘মহিষখাগী’।দেবীর কাছে করা সব মনোস্কামনা সত্যি হয় এই কথা শুনে এক বার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র আটটি মহিষ বলি দিতে এসেছিলেন মায়ের কাছে। সেই বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ করতে রাত গড়িয়ে ভোর হয়ে যায়। তাই পুজোকে দুই পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছিল। বলির আগে পর্যন্ত পুজোর প্রথম পর্ব। আর বলির পরবর্তী সময়ে পুজোর দ্বিতীয় পর্ব।তবে মহিষবলী দিয়ে পুজো সম্পন্ন করে ফিরে যান মহারাজ।এই মহিষখাগীর পুজোয় একটি অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য আছে।এখানে বিয়ের রীতি মেনে মহিষখাগীর পুজো হয়। প্রথম পাটে ওঠানোর দিনে থাকে বিভিন্ন নিয়মরীতি। পাটে ওঠানোর পর মন্দির প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে সেই দিনই ভোররাতেই বিবাহের ন্যায় দধিমঙ্গল হয়। অমাবস্যা শুরু হলে বিয়ের রীতি মেনে পুজো হয়। আবার পরের দিন বাসি বিয়ের রীতিতে পুজো হয়।সকালে পান্তাভাত এবং খয়রা মাছের রান্না দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়।পুজো শেষে কাঁধে করে বিসর্জনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিমা।এই রীতিই এখানে পাঁচশো বছর ধরে চলে আসছে।স্বপ্নাদেশ পাওয়া ওই তান্ত্রিকের মৃত্যুর পর স্থানীয় একটি ব্রাহ্মণ পরিবার এই পুজোর ভার নেয়। পরবর্তীতে স্থানীয় বাসিন্দারা এই পুজোর দায়িত্ব নেয় এবং তারাই বর্তমানে মহিষখাগী মায়ের পুজো সুন্দর ভাবে পরিচালনা করছে।ফিরে আসবো আগামী পর্বে।এমনই কালী কথা নিয়ে।থাকবে এমন সব অলৌকিক ঘটনা।পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।