দেবাদিদেব মহাদেব কে নিয়ে আলোচনা হলে স্বাভাবিক ভাবেই তার দুই বিশ্বস্ত অনুচর নন্দী
এবং ভৃঙ্গীর প্রসঙ্গ এসে যায়।আজ এদের নিয়ে আলোচনা করবো। শেষে থাকবে এই সংক্রান্ত একটি উপাচার।
শিব মহাপুরাণ মতে, নন্দী শিলাদ মুনির পুত্র। শিলাদ ছিলেন ভগবান শিবের পরম ভক্ত এবং শিবের আশীর্বাদেই নন্দীর জন্ম হয়েছিলো এবং শিব স্বয়ং তাকে চিরঞ্জীবী হওয়ার বর দেন ও নিজের বাহন হিসেবে স্থান দেন|রামায়ণেও নন্দীর উল্লেখ পাওয়া যায় যেখানে অহংকারী রাবন কৈলাশ এসে নন্দীকে তার চেহারার জন্যে অপমান করেন ও বানর বলেন, নন্দী তাকে অভিশাপ দিয়েছিলো যে এক বানর তার পতন ডেকে আনবেন, পরে তাই হয়েছিলো|
নন্দী ও ভৃঙ্গী কে নিয়ে পুরানে অনেক কথাই বলা আছে কূর্মপুরাণে নন্দী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, মহাদেবের এই প্রধান অনুচরটি করালদর্শন, বামন, বিকটাকার, মুণ্ডিতমস্তক, ক্ষুদ্রবাহু ও মহাবল।পূর্বে নন্দী মহারাজ পৃথক দেবতা হিসেবেও পূজিত হতেন পরবর্তীতে তিনি শিবের বাহন হিসেবে স্থান পান|
নন্দীর ন্যায় ভৃঙ্গীও শিবের অনুচর। নন্দী যেমন হৃষ্টপুষ্ট, ভৃঙ্গী তেমনই রুগ্ন , কঙ্কালসার। ভৃঙ্গী আগে ছিলেন এক মশিবের উপাসক। তিনি শিবের সাথে একত্রে পার্বতীর পুজোয় কিছুতেই রাজি নন জেনে ক্রুদ্ধ পার্বতী ভৃঙ্গী কে অভিশাপ দিলেন। সেই অভিশাপে ভৃঙ্গী কঙ্কালে পরিণত হলেন। দু’পায়ে আর দাঁড়াতে পারেন না তিনি, তখন শিবের আশীর্বাদে তাঁর তৃতীয় চরণের সৃষ্টি হল। কিন্তু তবু ভৃঙ্গী পার্বতীর পুজো করবেন না। তখন শিব তাঁকে নিজের অর্ধনারীশ্বর রূপ দেখালেন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন যে পার্বতী শিবেরই অংশ। পরবর্তীতে তিনিও হয়ে উঠলেন শিবের অনুচর, একত্রে উচ্চারি হতে শুরু হয় নন্দী ও ভৃঙ্গীর নাম|
শ্রাবন মাসে শিবের পাশাপাশি নন্দী ও ভৃঙ্গীর পুজো করলে শিব তাড়াতাড়ি সন্তুষ্ট হন এবং বাস্তু শাস্ত্র মতে বাড়িতে নন্দী মূর্তি থাকলে বাস্তু দোষ দূর হয়।
আগামী পর্বে আবার কোনো নতুন বিষয় নিয়ে আসবো আপনাদে সামনে।থাকবে এমনই গুরুত্বপূর্ণ শাস্ত্রীয় উপদেশ। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।